পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা)প্রতিনিধি :
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে কারখানা আধুনিকায়নের কথা বলে আখ মাড়াই বন্ধ ঘোষিত রংপুর চিনিকল পুনরায় চালুর খবরে এলাকায় বইছে খুশির বন্যা। উপজেলার মহিমাগঞ্জে অবস্থিত গাইবান্ধার একমাত্র কৃষিভিত্তিক ভারি শিল্পকারখানা রংপুর চিনিকল।
কিন্তু গত ১৫ ডিসেম্বর শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে মাড়াই স্থগিতকৃত ছয়টি চিনিকলের মাড়াই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের সরকারি সিদ্ধান্তের খবর ছড়িয়ে পড়লে আখচাষীসহ সর্বস্তরের মানুষের মাঝে বয়ে যায় আনন্দের বন্যা। এ জনপদের মানুষ নতুন করে দেখতে শুরু করেছেন সুদিনের স্বপ্ন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ ডিসেম্বর একটি চিঠি বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আফরোজা বেগম পারুল স্বাক্ষরিত ৩৬.০০.০০০০.০৬৪.৯৯.০১২.২৪.১৬৪ নাম্বার স্মারকে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন-এর অধীন মাড়াই স্থগিতকৃত চিনিকল সমূহে পুনরায় মাড়াই কার্যক্রম চালুকরণ শিরোনামের বিএসএফআইসি’র চেয়ারম্যান (গ্রেড-২) এর বরাবরে একটি পত্র প্রদান করা হয়। এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকার আখচাষীসহ সকল স্তরের মানুষের মাঝে আনন্দের বন্যা বয়ে যেতে শুরু করে।
রংপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ইনচার্জ) মাসুমা আকতার জাহান জানান, রংপুর চিনিকলসহ মাড়াই স্থগিতকৃত ছয়টি চিনিকল পুনরায় চালুর বিষয়টি আমিও শুনেছি। আধুনিকায়নের মাধ্যমে এই চিনিকলটি চালু হলে অবশ্যই লাভজনক অবস্থায় উন্নীত হবে। কারণ এখানকার মাটি ও পরিবেশ আখ চাষের জন্য খুবই উপযোগী।
রংপুর চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান সুজা জানান, দেশের কৃষক-শ্রমিকদের স্বার্থের বিপরীতে গিয়ে বিগত স্বৈরাচারী সরকার রাষ্ট্রায়াত্ত চিনিশিল্প বন্ধ করে দেয়ার গভীর চক্রান্ত করেছিল। চিনিকলটি বন্ধ হয়ে থাকায় এই জনপদের সকল স্তরে অন্ধকার নেমে এসেছে। বর্তমান সরকার অসাধু সিন্ডিকেটের ষড়যন্ত্রের এই জাল ছিন্ন করে পুনরায় চিনিকলটি আধুনিকায়নের মাধ্যমে চালু করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা খুবই বাস্তবসম্মত। আমরা একে স্বাগত জানাই।
গত চার বছর বন্ধ থাকায় ৩৫ একর আয়তনের কারখানার চত্বর ভরে গেছে জঙ্গলে। এই দৃশ্য দেখলে মানুষের সরব উপস্থিতির অভাব নিশ্চিত হওয়া যায় খুব সহজে। খোলা আকাশের নিচে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকা আখ পরিবহনের যানবাহনগুলোও ধ্বংসের পথে। কারখানার ভেতরের দৃশ্যটাও একই রকম। কোটি কোটি টাকা মূল্যের যন্ত্রপাতিতে এখন মরিচার রাজত্ব। থমকে আছে জীবিকার চাকাগুলো। আখচাষী আর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিত্যদিনের সমাবেশের চিরচেনা দৃশ্য আর নেই। হাজারো মানুষের একসময়ের জীবন-জীবিকার কেন্দ্রস্থলের প্রবেশপথ ও মিলে আখ সরবরাহের জন্য শত শত সারিবদ্ধ গাড়ির বিশাল প্রাঙ্গণটি এখন গো-চারণভূমি।