স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানী শ্যামপুর থানাধীন,পোস্তগোলা ৩৯করিমউল্লারবাগ আরিফ ডেন্টাল এন্ড মেডিকেল হলে ভূয়া ডিগ্রী ব্যবহার করে সাধারণ জনগণের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছে ডাঃ আরিফুল হাসান(রানা)ও তার স্ত্রী ডাঃ রোকসানা আক্তার কেয়া। বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল থেকে তাদের কাছে ভুয়া অনঅনুমোদিত ডিগ্রি ব্যানারে, সাইনবোর্ডে, প্যাডে, ভিজিডিং কার্ডে ব্যবহারের জবাব জানতে চেয়ে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় তাদের চেম্বারের বাহিরে বড় বড় সাইনবোর্ড সাটানো, আর তাতে লেখা আছে দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোঃ আরিফুল হাসান রানা ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ রোকসানা আক্তার কেয়া। যদিও তাদের চেম্বার “আরিফ ডেন্টাল এন্ড মেডিকেল হল” এর ফেসবুক লাইক পেজে নিজেদেরকে জেনারেল ডেন্টিষ্ট বা সাধারণ দন্ত চিকিৎসক বলে পরিচয় দিয়েছেন। আরিফুল হাসান রানা বেসরকারি পাইওনিয়ার ডেন্টাল কলেজ থেকে বিডিএস পাশ করেন যদিও সে তার পাস করা কলেজের নাম সাইনবোর্ডে, ব্যানারে, প্যাডে, ভিজিটিং কার্ডে না লিখে কৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন। পাইওনিয়ার ডেন্টাল কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত হওয়ায় সে তার কলেজের নাম না লেখে বিডিএসের পর সংক্ষেপে ঢাঃইউঃ লিখে রেখেছে, যেন সাধারণ মানুষ মনে করে সে ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করে দাঁতের ডাক্তার হয়েছেন। তার স্ত্রীরও একই অবস্থা। তারচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তারা যে “পিজিটি” ট্রেনিং করেছেন তা বড় বড় অক্ষরে ব্যানারে লিখে রেখেছে আর এখানেই জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ষোলোকলা পূর্ণ করেছেন। সাইনবোর্ডে তারা ফলাও করে লিখেছে “পিজিটি” (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) যেন সাধারণ মানুষ বোঝে তারা ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও ডিগ্রী নিয়েছে। আর অতি সরল মানুষ মনে করবে তারা ঐ হাসপাতালের ডাক্তার। যদিও এ ধরনের পিজিটি’র মতো ডিগ্রি বা ট্রেনিং এর নাম সাইনবোর্ডে, প্রেসক্রিপশনে বা ভিজিটিং কার্ডে ব্যবহার রোধে ২০১৪ সালের ১৭ এপ্রিল বিএমডিসি (বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল) থেকে একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয় পিজিটি যা কোনো স্বীকৃত চিকিৎসা শিক্ষাগত যোগ্যতা নয় এবং বিএমডিসি থেকেও স্বীকৃত নয়। সব নিবন্ধিত চিকিৎসককে ও দন্তচিকিৎসককে বিএমডিসি স্বীকৃত বহির্ভূত কোন ডিগ্রি,পদবী বা ট্রেনিং সাইন বোর্ডে, প্যাডে ও ভিজিডিং কার্ডে ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। নাজমুল হাসান নামে একজন রোগী ডাক্তার আরিফ হাসান(রানা) এর কাছে চিকিৎসা করতে গিয়ে প্রতারিত হয়েছেন বলে বিএমডিসির ট্রেজারার ডাঃ মোঃ আরমান হোসেন সাহেবের কাছে অভিযোগ করেন, ভূয়া ডিগ্রী ব্যবহার করে প্রতারিত করার কারনে ডাঃআরিফুল হাসান(রানা)ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে নোটিশ প্রদান করেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএমডিসি ট্রেজারার দৈনিক দিন প্রতিদিনকে বলেন এ ধরনের অপরাধের জন্য ডাক্তার আরিফ হাসান(রানা) এবং তার স্ত্রী’র হতে পারে তিন বছরের জেল এবং এক লক্ষ টাকা জরিমানা। বিএমডিসি’র রেজিষ্টার ডাক্তার মোহাম্মদ আরমান হোসেন বলেন, বিএমডিসি স্বীকৃত ডিগ্রি দেখেই সত্যিকারের চিকিৎসক চেনা যায়। বিএমডিসি স্বীকৃত ডিগ্রি ছাড়া অন্য যেসব ডিগ্রি চিকিৎসকরা তাদের নামের সঙ্গে ব্যবহার করে তা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দন্ডনীয় অপরাধ। সেই হিসাবে আরিফ ডেন্টাল এন্ড মেডিকেল হল এর কর্ণধার ডাঃআরিফুল হাসান (রানা) ও তার স্ত্রী রোকসানা আক্তার (কেয়া) বিএমডিসি স্বীকৃত নয় “পিজিটি” ট্রেনিং ফলাও করে প্রচার করে, ব্যানারে ও সাইনবোর্ডে ব্যবহার করে বে-আইনী কাজ করেছেন যা আইনের দৃষ্টিতে দন্ডনীয় অপরাধ। বাংলাদেশ মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০ এর ২৯(১) ধারায় ভুয়া পদবি, ডিগ্রি ইত্যাদি ব্যবহার নিষিদ্ধের শাস্তির ব্যাপারে উপধারা (২) এ বলা হয়েছে, উপধারা (১)এর বিধান লঙ্ঘন করলে তা হবে একটি অপরাধ এবং তার জন্য তিনি ৩ বছরের কারাদণ্ড বা ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দন্ডিত হবেন। বিএমডিসি রেজিস্টার আরো বলেন, চিকিৎসকরা তাদের নামের সঙ্গে যেসব ডিগ্রি লিখবেন সেগুলো অবশ্যই বিএমডিসি থেকে স্বীকৃত হতে হবে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।