তিতাসে প্রতারক চক্রের উত্থান, মামলা থেকে রেহাই পেতে ছিনতাইকৃত টাকা ফেরত

received_769635877444187.jpeg

মোঃ জুয়েল রানা, স্টাফ রিপোর্টারঃ
কুমিল্লার তিতাস উপজেলার নাগেরচর গ্রামের হাসান নামের এক প্রতারক চক্রের উত্থান হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মামলা থেকে রেহাই পেতে জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে ছিনতাইকৃত টাকা ফেরত দিয়েছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে তিতাস উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের নাগেরচর গ্রামে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, নাগেরচর গ্রামের মৃত আক্তার মিয়ার ছেলে মো. হাসান(২৮) তার নিজের বাইক বিক্রয় করবে বলে বিক্রয় ডট কমে বিজ্ঞাপন দেয়। সে বিজ্ঞাপন দেখে বিভিন্ন জেলা থেকে বাইক কিনতে ক্রেতা আসলে প্রতারক হাসান ও তার বাহিনী ক্রেতার উপর হামলা করে সঙ্গে থাকা টাকা, মোবাইল ও মানিব্যাগ রেখে দেয়।

তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ই সেপ্টম্বর মটর সাইকেলের এমন পোস্ট দেখে চট্রগ্রাম জেলার বন্দর থানার বাসিন্দা মৃত ফেরদৌস মিয়ার ছেলে মো.জুয়েল ও তার বন্ধু মোর্শেদ মটর বাইক কিনতে তিতাসে আসলে প্রতারক হাসান তার সহযোগীদের নিয়ে মটর বাইক ক্রেতা জুয়েল ও তার বন্ধু মোর্শেদকে কুমিল্লা জেলার হোমনা থানার শিবপুরের এক নির্জন এলাকায় নিয়ে মারধর করে পাঁচ লাখ ৬০ হাজার টকা দুটি মোবাইল ও একটি ম্যানিব্যাগ রেখে দেয়।

এঘটনায় জুয়েল বাদী হয়ে হোমনা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ সহকারী উপ-পরিদর্শক (এ এস আই) মাসুদ অভিযান চালিয়ে একজন অভিযুক্ত সাইদুল ইসলামের পিতা জাকির হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে গেলে টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে মুচলেখা দিয়ে ছুটে আসেন।

এবিষয়ে ভিকটিম মো.জুয়েল বলেন, আমি ফেসবুক অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেখে হাসনের সাথে যোগাযোগ করে কুমিল্লার তিতাসে যাই ১৬ সেপ্টেম্বর দুপুর আনুমানিক ১.৩০ মিনিটে। পরে হাসান ও তার ৪ সহযোগী একটি নির্জন যায়গায় নিয়ে ছুরি দেখিয়ে এবং আমাদের মারধর করে আমার সাথে থাকা পাঁচ লাখ ৬০ হাজার টকা, দুটি মোবাইল ও একটি মানিব্যাগ নিয়ে যায়। এঘটনায় আমি হোমনা থানায় লিখিত অভিযোগ করলে আসামীর স্বজনরা আমার সাথে যোগাযোগ করে এবং আমাকে যেতে বলে। আমি গত সোমবার ( ৩ অক্টোবর) বিকেলে লোকজন নিয়ে তিতাস উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিন এর বাড়িতে গেলে ১নং আসামী হাসানের কাকা আমাকে চার লাখ টাকা ফেরত দেয় এবং বলে পরবর্তীতে দুটি মোবাইল ও মানিব্যাগ ফেরত দিবে। এই সিদ্ধান্তের ওপর আমি হোমনা থানায় গিয়ে আপোষ নামা দিয়ে আসছি। আমার মোবাইল ও মানিব্যাগ ফেরত চাই।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, বিষয়টি আমি জানিনা। বাদী ও বিবাদীদের লোকজন আমার বাসায় এসে তারাই আলোচনা করে মিমাংসা করে বাদীকে চার লাখ টাকা দিয়েছে এবং হোমনা গিয়ে আপোষ নামা দিয়ে আসছে।

অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী উপপরিদর্শক (এ এস আই) মাসুদ বলেন, বাদী-বিবাদী আপোষ হয়ে থানা এসে আপোষনামা দিয়ে গেছে। কতো টাকা পেয়ে আপোষ হয়েছে আমি জানিনা। এর আগেও এই চক্রটি ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট থানার কড়ুয়া পাড়া গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেন এর ছেলে রুবায়েত হোসেন অনিক এর কাছ থেকে বিশ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল রেখে দিয়েছে। বিষয়টি মৌখিকভাবে তিতাস থানা উপপরিদর্শক (এস আই) মাহমুদকে জানিয়েছেন বলে জানান রুবায়েত হোসেন অনিক।

এবিষয়ে তিতাস থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদ বলেন, আমাকে মৌখিকভাবে একটি ছেলে আমাকে এমন একটি ঘটনা বলেছে। তখন আমি ওসি স্যারের সাথে কথা বলে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা বললে অনিক পরে আসবো বলে চলে যায়।

বলরামপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও নাগেরচর গ্রামের বাসিন্দা মো. আবুল হোসেন বলেন, ভিকটিম টাকা পেয়েছে এতে আমি খুশি কিন্তু এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছে বেলে শুনতেছি। এই চক্রের কারনে আমাদের নাগেরচর গ্রামের মানসম্মান ক্ষুন্ন হয়েছ,পাশাপাশি তিতাস উপজেলার মান ক্ষুন্ন হয়েছ। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আমার দাবী চক্রের মুল হোতাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। অপর দিকে প্রতারক হাসানের কাকা আলম মিয়ার নিকট জানতে চাইলে তিনি সঠিকভাবে কিছুই বলতে চান না, বিষয়টি এড়িয়ে যায়।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top