চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত ২২হাজার মানুষ বিচ্ছিন্ন জনপদে নেই চিকিৎসক, ভরসা ১জন সিএইচসিপি

received_482723670402830.jpeg

মো:ফিরোজ, বাউফল প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মূল ভূখÐ থেকে বিচ্ছিন্ন তেতুঁলিয়া নদী বেষ্টিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের প্রায় ২২হাজার হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবায় নেই কোনো স্বাস্থ্য কেন্দ্র কিংবা চিকিৎসক। অবহেলিত এ জনগোষ্ঠীর একমাত্র ভরসা একটি জরাজীর্ণ কমিউনিটি ক্লিনিকের একজন হেল্থ কমিউনিটি কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি)।
তথ্য মতে, ২০১৩ সালে তেতুঁলিয়ার বুকে ১১টি চর নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে প্রায় ২২হাজার মানুষের আবাস। যারা অধিকাংশ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করে। তাঁদের প্রধান পেশা জেলে কৃষি ও শ্রমিক। হতদরিদ্র মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে নির্মিত হয়নি কোন হাসপাতাল বা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র। নেই কোনো চিকিৎসক। এছাড়াও একটি ইউনিয়নে তিনটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক থাকার কথা থাকলে এখানে রয়েছে মাত্র একটি। যা ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এখন যা জরাজীর্ণ। জনবল সংকটে অবস্থা বেহাল। চন্দ্রদ্বীপের ২২হাজার মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় সপ্তাহে ৬দিন নিয়োজিত থাকেন একজন প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) এবং তিন দিন একজন স্বাস্থ্য সহকারী। নিয়ম অনুযায়ী ওই ক্লিনিকে সপ্তাহে দুইদিন একজন উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার ও তিনদিন একজন পরিবার কল্যাণ সহকারী (এফ ডবিøউ এ) থাকার কথা থাকলেও তা নেই। একটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ৬ হাজার মানুষের স্বাস্থ্য সেবার জন্য প্রতি দুই মাসে দেওয়া হয় ১কিট ঔষধ সামগ্রী। যা দিয়ে ২২ হাজার মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া সম্ভব না।
মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চর ওয়াডেল কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে এসেছেন প্রায় ৪৫/৫০ জন নারী পুরুষ বৃদ্ধ গর্ভবতী মা ও শিশু। যারা জ্বর সর্দি কাশি এলার্জিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। ক্লিনিকের সিএইচসিপি মো. সিদ্দিকুর রহমান তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা পরামর্শ ও বিনামূল্য ওষুধ দিচ্ছেন। বিপুল সংখ্যক রোগীকে সেবা দিতে হিমশিম হচ্ছে। রয়েছে ঔষধ সংকটও।
স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসা কচুয়া গ্রামের আকবার হাওলাদার (৪৭) বলেন,‘ উপজেলা থেকে আমরা বিচ্ছিন্ন ইউনিয়নে বসবাস করি। উপজেলা হাসপাতালে যেতে আমাদের একমাত্র বাহন ট্রলার। উত্তাল তেতুঁলিয়া পাড়ি দিয়ে আমাদের সেখানে যেতে হয়। আমাদের চিকিৎসা সেবার জন্য এক মাত্র ভরসা এই ক্লিনিকের সিদ্দিুকর রহমান।
এছাড়াও মাতৃত্বকালীন সেবা নিতে আসা দিয়ারা কচুয়া গ্রামের আসমা বেগম (৩৯), রায়সাহেবের রাবেয়া বেগম (২৯) ও চর ওয়াডেলের ঝুমুর বেগম (২৫)সহ অনেকে। তাঁরা জানান, দুরদুরান্ত থেকে এখানে আসতে হয়। চন্দ্রদীপে পর্যাপ্ত ক্লিনিক না থাকায় তাঁদের সিমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এবিষয়ে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চরওয়াডেল কমউনিটি ক্লিনিকের কমউনিটি হেল্থ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন,‘ চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে একটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র, একটি পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও তিনটি কমউনিটি ক্লিনিকের বিপরীতে মাত্র একটি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। যার কারনে চিকিৎসা সেবা সাধারন মানুষের দৌঁড়গোরায় পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।
এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডাঃ প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন,‘ নতুন ইউনিয়ন হওয়ায় এখন জনবল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্র সংকট রয়েছে। চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে ওখানে দুইটি কমউনিটি ক্লনিকি ও একটি পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র স্থাপণের কাজ চলছে। অতিদ্রæত তা বাস্তবায়ন করা হবে।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top