মোঃ ফিরোজ, বাউফল উপজেলা প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর বাউফলে নামধারী সাংবাদিকদের দৌরত্ম্যে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে মানুষ । গ্রামগঞ্জ থেকে শুরু করে শহর পর্যন্ত সর্বত্র এরা বিচরণ করছে। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। দুইশ’র উপরে নামধারি সাংবাদিক রয়েছে এ উপজেলায়। অখ্যাত ও আন্ডারগ্রাউন্ড ও অনলাইন পত্রিকার কার্ড নিয়ে এসে এরা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে শহর থেকে গ্রামে দাবড়ে বেড়াচ্ছে। বাইকের সামনে পত্রিকার ইস্টিকার সাটিয়ে ৪-৫টি গাড়িতে করে ১০-১২ জন একত্রে এক জায়গায় গিয়ে এ অনিয়ম ও অনিয়মের নামের মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। পরে দরকাষাকষি করে একটি নিদৃষ্ট অংকের টাকা নিয়ে এসে তা নিজেরা ভাগভাটোরা করে নেয়। তারা গলায় কার্ড ঝুলিয়ে ও হাতে আইপি টিভি( ইউটুউবের) বুম নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ায়।
অভিযোগ রয়েছে, এসব নামধারী সাংবাদিকরা ভাড়ায় গিয়ে অন্যর পক্ষে সাফাই গায়। অধিকাংশ সময় তাদেরকে থানার সামনে ঘুর ঘুর করতে দেখা যায়। এক শ্রেণীর পুলিশের সাথে সখ্যতা রেখে এড়া মামলার দালালি করে টুপাইস কামাই করে। তাদের এর বাইরে কোন কর্ম নেই। ব্যবসা বানিজ্য নেই। ধান্দাবাজি করে জীবীকা চালায়। অফিসপাড়ায় বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে গিয়ে তারা অড্ডা মারেন। তদবির করেন। অফিসপাড়ার অনেক কর্মকর্তারা এদের যন্ত্রনায় অতিষ্ট । কিন্তু মুখ খুলে তারা কছিু বলতে পারছেননা। ঘন্টার পর ঘন্ট চেয়ার আটকে বসে থকেন। ফলে ওই অফিসে আসা সেবাগ্রহীতাদের দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।
বাউফলে মূলধারার সাংবাদিকদের নিয়ে গঠিত বাউফল প্রেসক্লাবের বাইরেও এখানে আরও ২-৩টা অসাংবাদিকদের সংগঠন রয়েছে। তারা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মানুষকে হেনস্তা করছে। এরমধ্যে নামধারী অধিকাংশ সাংবাদিকই রাজনীতির সাথে জড়িত, মুদিদোকান ও ফ্লেক্সীলোডের ব্যবসা করেন। এমনকি ভাড়ায় বাইক চালান। তারা হয়েছেন সাংবাদিক। এ ছাড়া এখানে একটি পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধিসহ উত্তর ও দক্ষিন প্রতিনিধি হিসাবে তিনজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শহরে ঘর ভাড়া করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে তারা সাংবাদিকতার নামে ব্যবসা শুরু করেছেন। প্রতিমাসে চাঁদার টাকা দিয়ে তার ঘর ভাড়া প্রদান করেন।
খোঁজ নিয়ে দেখা গছে, এসম নামধারী সাংবাদিকদের মধ্যে ৯০ ভাগই কোন আলাদা কর্মের সাথে জড়িত নেই। ধান্দাবাজি করে চলেন। বাউফলে নামধারী সাংবাদিকদের ভিড়ের কারণে শীর্ষ সব জাতীয় দৈনিকের পেশাদারী সাংবাদিকরাও কোনঠাসা হয়ে পরেছেন। কোন সভাসমাবেশে গিয়ে ওই সকল নামধারী সাংবাদিকদের কারণে তারা বসার আসন পাননা। আগ থেকে গিয়ে তারা চেয়ার দখল করে বসে থাকে। এ নিয়ে খোদ প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরাও বিভ্রতকর অবস্থায় পরেন।
বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বশির গাজী আপসোস করে বলেন, শিক্ষিত এ জনপথে সাংবাদিকদের প্রতি মানুষের আস্তার জায়গা আগেরমত নেই। ১৫-২০ জন দল বেধে সভাসেমিনারে আসেন। চেয়ার দখল করে বসে থাকেন। ফলে সভায় গুরুত্ব বা আমন্ত্রীত ব্যক্তিদের বসার জায়গা থাকেনা। না পারি সহ্য করতে আর না পারি কিছু বলতে।
বাউফল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও প্রবীণ সাংবাদিক অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম বলেন, এসব অখ্যাত নামধারী সাংবাদিকদের কারণে আমাদের সকলেল বদনাম হচ্ছে। সবার উচিৎ এদের সামাজিক ভাবে বয়কট করা। পাশাপাশি সরকারের উচিৎ একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা তৈরি করা। পত্রিকা বা অনলাইনের সরকারী রেজিস্ট্রেশনসহ নন্যুতম ডিগ্রী পাশ ছাড়া কাউকে এ পেশায় নিয়োগ না দেয়া।