রাছিফুল ইসলাম,নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি :
নরসিংদীর চাঞ্চল্যকর মাদ্রাসা ছাত্র আবুল বাশার ওরফে বাদশা মোল্লাকে হত্যার দায়ে রায়হান মোল্লা নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে যাবৎজীবন কারাদন্ড এবং একই সাথে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ডের এক রায় প্রদান করা হয়েছে। গতকাল বুধবার নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক শামিমা পারভিন জনার্কিণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন। সাঁজা প্রাপ্ত আসামী হচ্ছে শিবপুর উপজেলার সৈয়দনগর পাঁচভাগ গ্রামের বাচ্চু মোল্লার ছেলে রায়হান মোল্লা।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, নিহত বাদশা মোল্লার পিতা বশির মোল্লা মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী দিলরুবা তিন সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি শিবপুর উপজেলার সৈয়দনগর পাচঁভাগ গ্রামে বসবাস করতেন। তিন সন্তানের মধ্যে নিহত আবুল বাশার ওরফে বাদশা মোল্লা স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় লেখা পড়া করতো। ২০০৬ সালের ১৮ জুলাই টাকার প্রয়োজনে বাদশা মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে আসে। পরে বাদশা মোল্লা তাদের পৈত্রিক সম্পত্তিতে লাগানো কলা ক্ষেত থেকে কলার ছড়ি কাটতে যায়। এতে বাধা দেয় প্রতিবেশি বাচ্চু মোল্লাার ছেলে রায়হান মোল্লা ও তার পরিবারের সদস্যরা। উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রায়হান মোল্লা পেছন থেকে বাদশাকে মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ঘটনার এক দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাদশা মোল্লা মারা যায়।
এঘটনায় নিহতের নানা নুরুল ইসলাম মৃধা বাদী হয়ে রায়হান মোল্লা সহ ৪ জনকে আসামী করে শিবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দীর্ঘ তদন্ত শেষে রায়হান মোল্লার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। উক্ত মামলায় ১১ জন স্বাক্ষীর উপযুক্ত স্বাক্ষ প্রমাণে আসামী রায়হান মোল্লা দোষী প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত তার বিরুদ্ধে উপরোক্ত রায় প্রদান করেন। বাকী তিন জন আসামীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকুসুর খালাস প্রদান করা হয়।
সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন জজকোর্টের আইনজীবি ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) এ্যাড. আসাদ্দুজ্জামান ওরফে জামান এবং আসামী পক্ষে ছিলেন এড. মোঃ অলিউল্লাহ।