কক্সবাজারের চকরিয়া মালুমঘাট রিংভং রহমানিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাহাবুবুল আলম ছিদ্দিকি নিয়ন্ত্রণে কোটি টাকার ঘুষ ও নিয়োগ বাণিজ্য।

Messenger_creation_1154485519343137.jpeg

মোহাম্মদ মিনার উদ্দিন আলী,(চকরিয়া-পেকুয়া) প্রতিনিধি:-

* ভুয়া সনদ তৈরী করে সুপারের ক্ষমতায় মাহাবুবুল আলম ছিদ্দিকি।

* মাদ্রাসা কতৃপক্ষের অনেকেই বিষয়টি জানলেও গোপন করতে মিশনে নামেন মাহাবুবুল আলম ছিদ্দিকি।

* ২০১৮ সালে সুপারের দায়িত্ব নিলেও নিজেকে ২০০৫ সালের সুপার দাবী করেন।

* ওলামালীগের হাত ধরেই সুপার দায়িত্ব নিলেন।

* শিক্ষক নিয়োগের টাকা ভাগ করে কমিটিও নিজে নিতেন।

রিংভং রহমানিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাহাবুবুল আলম ছিদ্দিকি নেতৃত্বে কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য করে ১৯ জন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। প্রতিজন থেকে সর্বনিম্ন ৬ লাখ থেকে ৮ লাখ টাকা করে ঘুষ নিয়েছেন এই ওলামা লীগ নেতা মাহাবুবুল আলম ছিদ্দিকি

তবে সরকার পতনের আগে কেউ মুখ খুলতে না পারলেও অনেকেই বিষয়টি বর্তমানে নানাভাবে বিভিন্ন দপ্তরে দপ্তরে মৌখিক ভাবে বুঝিয়েছেন। আবার অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরেও চাকরি দেয়নি। আবার টাকা ফেরতও দেয়নি। টাকা ফেরত চাইলে মামলা মোকদ্দমা ও প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতার ভয় দেখাতেন।এই দুর্নীতিবাজ মাহাবুবুল আলম সিদ্দিকী ।

মাহাবুবুল আলম সিদ্দিকী নিজেকে নিজেকে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাকালীন সুপার দাবী করে আসলেও কিন্তুু বিষয়টি সম্পুর্ন উল্টো। ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসাটি তার ভাই মহিউদ্দিন সুপারের দায়িত্ব পালন করে আসলেও মহিউদ্দিন মারা যাওয়ার পর অবৈধভাবে সুপার চেয়ার দখল করে নেন এই ওলামা লীগ নেতা মাহাবুবুল আলম ছিদ্দিকি।

মাহাবুবুল আলম ছিদ্দিকি স্বৈরাচারের একাধিক ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে নানা অনিয়মে ভরপুর করেছে মাদ্রাসাটিতে। নানাভাবে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে এমপিও ভুক্ত করে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন এই রক্তচোষা দুর্নীতিবাজ সুপার।

জানা যায় যে, মাদ্রাসাটির প্রয়াত সুপার মহিউদ্দিন ২০১৭ সালে মারা যাওয়ার পর ২০১৮ সালে ভাই মাহবুব আলম ক্ষমতার অপব্যবহার করে সুপার পদটি ভাগিয়ে নেন। তবে এই পদ ভাগিয়ে নিতে সাবেক প্রভাবশালী আওয়ামী লীগের নেতানেতার আওয়ামী লীগের নেতার কে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন বলে জানা যায়। এরই মধ্যে জালিয়াতি করে ২০১৮ সালের নিয়োগকে ২০০৫ সালের সনদ তৈরি করেছেন এই মাহাবুবুল আলম ছিদ্দিকি।একাধারে শিক্ষকদের জিম্মি করে নানাভাবে টাকা হাতিয়ে নেয়ারও খবর অহরহ। তার নিয়ন্ত্রণে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা অধিকাংশ ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ডিউটি করেন। যা সম্পূর্ণ সম্পূর্ণ বেআইনি। অত্র মাদ্রাসার এক শিক্ষক নাম বলতে অনিচ্ছুক, তিনি বলেন আমাদের মাদ্রাসার তিন শিক্ষক বাহিরে শিক্ষকতা করেন। তার মধ্যে একজন সুপারের আপন ছোট ভাই।

মাহাবুবুল আলম ছিদ্দিকি
বিরুদ্ধে অনেক ভুক্তভোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাকে মাদ্রাসায় সরকারি চাকরি দেয়ার কথা বলে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মাহাবুবুল আলম ছিদ্দিকি। যারা বেশি বেশি টাকা দিয়েছে তাদেরকে চাকরি নিশ্চিত করেছে। এই মুহুর্তে আমার টাকাও ফেরত দেয়নি। চাকরিও দেয়নি। বরং টাকা খুঁজলেই নানা অজুহাত দেখিয়ে এড়িয়ে চলে। তার বিরুদ্ধে এত বিস্তর অভিযোগ থাকার পরেও কেন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছেনা বলে জানান এই ভুক্তভোগী।

বিষয়টি
নিয়ে অত্র মাদ্রাসার সুপারের কাছে সরাসরি সাক্ষাৎ করি,কথা বললে তিনি বলেন, আমি দুর্নীতি করেছি,আমার একান্ত বিষয়, আমার বিরুদ্ধে মাদ্রাসাটির অভিযোগ করে আমার কিছুই পারবেনা।কারণ মাদ্রাসাটি আমার।আমার যেমন মন চায় তেমন আমি করব।আমি মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠা কালীন শিক্ষক ছিলাম,আমি বাহিরে ব্যবসা বাণিজ্য করতাম।আমার ভাই দেখভাল করত,আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে লাভ নেই। আপনার আমার বিরুদ্ধে নিউজ করে কোন কাজে আসবেনা।আর নিউজ করলে চাকরি চলে গেলেও আমার কোন সমস্যা নেই,আমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড য়ে কোথায় কি করতে হয় আমার সবকিছু চিনি/জানি এবং তবে আমার ভালো জানা আছে । এমনিতেই বছর দুয়েক সময় আছে।চাকরি চলে গেলে যাক,আর সাংবাদিকরা নিউজ করলে প্রতিবাদ দিব। কোন সমস্যা নেই।

এবিষয়ে
চকরিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,তিনি মাদ্রাসাটির সুপার হিসেবে আছে এই টুকু আমি জানি,তবে সে কীভাবে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে বা কীভাবে ঘুষ নিয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে সে যদি এমন কান্ড ঘটিয়ে থাকে তাহলে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর বিষয়টি অবগত করব।পরবর্তী তার বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নিবে নিক।

এদিকে
কক্সবাজার জেলা অতিরিক্ত শিক্ষা অফিসার রাম মোহন সেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সবে মাত্র দায়িত্ব বুঝিয়ে নিয়ছি। চকরিয়াতে রিংভং মাদ্রাসা আছে তা আমার জানা নাই। আপনার মাধ্যমে শুনেছি,তবে আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি ভালো হয়েছে। আপনারা যে বিষয়টির কথা বলেছেন অবশ্যই এটি একটি নিকৃষ্ট কাজ। আমি ইতিমধ্যে নিয়ে অবগত হয়েছি আপনার মাধ্যমে খতিয়ে দেখে যদি প্রমাণিত হলে যার চাকরি নিয়েছে এবং যিনি মাস্টার মাইন্ড তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top