বাবার সঙ্গে পরকীয়া সন্দেহে বরিশালে শাশুড়িকে গলা কেটে হত্যা, পুত্রবধূ গ্রেফতার

2.jpg

খোকন হাওলাদার, বরিশাল:
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় বাবার সঙ্গে পরকীয়া সন্দেহে শাশুড়িকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নিহত নাজনীন বেগমের (৪৮) পুত্রবধূ লাবন্য আক্তারকে (২০) আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।

বুধবার (১১ মে) রাত ১০টার দিকে উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঠালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত নাজনীন বেগম কাঠালিয়া গ্রামের মৃত হানিফ হাওলাদারের স্ত্রী। আটক লাবন্য আক্তার নিহত নাজনীন বেগমের ছেলে উজ্জল হাওলাদারের স্ত্রী এবং পার্শ্ববর্তী ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কুশঙ্গল গ্রামের মো. খলিলের মেয়ে।

নিহত নাজনীন বেগমের প্রতিবেশীরা জানান, ৩ বছর আগে উজ্জল হাওলাদারের সঙ্গে লাবন্য আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে আসার পর লাবন্য আক্তার উগ্রভাবে চলাফেরা করতেন। তার স্বামী উজ্জল হাওলাদার ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। শ্বশুরবাড়িতে লাবন্য তার শাশুড়ির সঙ্গে থাকতেন। কিন্তু উগ্রভাবে চলা ফেরার কারণে স্বামী উজ্জল ও শাশুড়ি নাজনীনের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল না।

ঈদের ছুটিতে উজ্জল বাড়িতে আসেন। ঈদের পরদিও স্বামী ও শাশুড়ির সঙ্গে ঝগড়া লাগে তার। একপর্যায়ে স্বামী উজ্জলের গায়ে হাত তোলেন লাবন্য। এরপর লাবন্য শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে গিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠেন। ছুটি শেষে গত সোমবার উজ্জল কর্মস্থল ঢাকায় ফিরে যান। বুধবার সন্ধ্যায় লাবন্যকে তার বাবা শ্বশুরবাড়িতে রেখে যান। রাত ১০টার দিকে নাজনীন বেগমের ভাসুর কালাম হাওলাদার তাদের ঘরে আসেন। ঘরে ঢুকে গলাকাটা অবস্থায় নাজনীন বেগমের মৃতদেহ দেখতে পান।

কালাম হাওলাদার বলেন, বুধবার রাতে উজ্জল ঢাকা থেকে তার মা নাজনীন বেগমকে বেশ কয়েকবার ফোন দেয়। কিন্তু নাজনীন বেগম ফোন ধরছিলেন না। রাত ১০টার দিকে উজ্জল আমাকে ফোন দিয়ে তার মা নাজনীন বেগমের খোঁজ নিতে বলেন। ঘরে গিয়ে দেখি মৃতদেহ পড়ে আছে। বিছানা রক্তে ভেজা। এরপর পুলিশে খবর দিই।

বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলাউদ্দিন মিলন বলেন, রাতে ঘরে নাজনীন বেগমকে ধারালো ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। ঘরে নাজনীন ও তার ছেলে বউ লাবন্য আক্তার ছিলেন। এ ঘটনায় লাবন্য আক্তারকে আটক করা হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে লাবন্য পুলিশকে জানিয়েছেন, তার বাবা মো. খলিলের সঙ্গে শাশুড়ির সম্পর্ক ছিল। বেশ কয়েকবার বিষয়টি তার চোখে ধরা পড়েছে। এটা তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না। এ কারণে তিনি শাশুড়িকে হত্যা করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।

ওসি আলাউদ্দিন মিলন আরও বলেন, নাজনীন বেগমের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top