মোঃলিটন মাহমুদ, মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
লোকসান দিতে বলছি না, লাভটা একটু কমাইয়া করেন। তাহলে জনসাধরণের উপরে দ্রব্যমূল্যের প্রভাবটা পরবে না। টাকা দিলে খাবার আছে, না দিলে নাই, এটাতো হতে পারে না। ডিমান্ড সাপ্লাই পারস্পরিকভাবে জড়িত। আমাদের কিন্তু যথেষ্ট ডিমান্ডের সাথে যথেষ্ট সাপ্লাইও আছে। কিন্তু কতিপয় অসাধু ব্যবাসায়ীরা ঘাটতির সৃষ্টি করেন। আমি আপনাদের বলবো আপনারাতো দেশ-প্রেমিক মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর সেই দ্বিতীয় স্বপ্ন এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য গতকাল ১১জুন শনিবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জের মীরকাদিম পৌরসভার কমলাঘাট বন্দরে সামরীন এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের লিমিটেডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যাবসায়ীদের উদ্দেশ্যে এসব কথাগুলো বলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রাণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অনেক উন্নত সমৃদ্ধ দেশেও কিন্তু প্রবৃদ্ধির হার নেগেটিভে চলে যাচ্ছে। কিন্তু সুযোগ্য প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার ৭ পারসেন্টের উপরে। আপনারা নিজেরাও দেখেছেন এদেশে কিন্তু একটি লোকও না খেয়ে মারা যায় নাই। কভিডের প্রভাব কিন্তু এখনও বাংলাদেশে নাই, তারপরেও দ্রব্যমূল্যের উদ্ধগতি। ব্যবসা যারা করেন আপনারতো আমদেরই লোক জনগণও কিন্তু আমাদের আপনাদের লোক। ব্যাবসায়ী ভাইরা যদি একটু সচেতন হন। সবার অবস্থাতো আর আপনাদের মতো না । আশেপাশে তাকিয়ে দেখুন তাদের অবস্থা তাদের আর্থিক অবস্থাটা বিবেচনা করে লাভের মাত্রাটা যদি একটু কমাইয়া করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মান সহজ ছিল না। এটি একটি কষ্টসাধ্য বিষয় ছিল। দুঃসাধ্য ছিল। অবাস্তব ছিল। শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবাস্তবকে বাস্তবে পরিণত করেছেন।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সকল ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করেছেন। আমাদের নিজস্ব অর্থায়নের মাধ্যমে পদ্মাসেতু নির্মাণ করে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকে দেখিয়েছেন বাংলাদেশও পারে।
পদ্মা সেতু কি সেটি তারাই জানে, যারা ঘন্টার পর ঘন্টা পদ্মা পাড়ি দেওয়ার জন্য শিমুলিয়া ঘাট অপেক্ষা করতেন। সন্তান হীন মায়েরা, যারা সন্তানের লাশ নিয়ে ঘাটে অপেক্ষা করেছেন।
ওই প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা, যারা ফেরিপার হতে না পেরে প্লেনের ফ্লাইট মিস করেছিল। আর জানে ওই গরীব কৃষক, খুদে ব্যবসায়ীরা। যারা সময়মতো ফেরি পার হতে না পারায় তাদের উৎপাদিত কাঁচা তরকারি নষ্ট হয়েছিল। সব ভুক্তভোগীরাই জানেন এ পদ্মা সেতুর মর্ম। একমাত্র জানেন না খালেদা জিয়া। বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ব্যক্তিরা। খালেদা জিয়া বলেছিলেন তিনি ক্ষমতায় আসলে একটা নয়, তিনি দুইটা পদ্মা সেতু নির্মাণ করবেন। যারা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় একটি কালভার্ট নির্মাণ করতে পারেনি তারা করবেন সেতু! প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষকে পদ্মাসেতুর স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তিনি সেটি বাস্তবায়ন করেছেন। খালেদা জিয়া বলেছিলেন, পদ্মা সেতু জোড়াতালির। কেউ উঠবেন না।
মন্ত্রী বলেন, পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে। সে অঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থান হবে। তাদের জিডিপি বৃদ্ধি পাবে। শুধু দক্ষিণ অঞ্চল নয় সারা বাংলাদেশের উপর এর প্রভাব পড়বে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে। বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে, এখন আর কেউ খালি পায়ে থাকেনা কাউকে না খেয়ে মরতে হয়না।
সামরীন এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক ও সাবেক মিরকাদিম পৌরসভার মেয়র শহিদুল ইসলাম শাহীনের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক ফরিদা পারভীন, সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আনিসুজ্জামান আনিস, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মিনহাজ- উল- ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আফসার উদ্দিন ভূইয়া, রামপাল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী মো. বাচ্চু শেখসহ মিরকাদিম এলাকার ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।
সামরীন এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের উদ্বোধন করেন ইভিন্স গ্রুপ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার উল আলম চৌধুরী।