মোঃ ফিরোজ, বাউফল উপজেলা প্রতিনিধি,পটুয়াখালী:
পটুয়াখালীর বাউফলের বগা বন্দর পোস্ট অফিসের সাব-পোস্ট মাস্টার আবদুল ওহাবের বিরুদ্ধে শতাধিক গ্রাহকের সঞ্চনপত্রের প্রায় ২কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় ভুক্তভোগী গ্রাহকরা আজ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বাউফল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বগা ইউনিয়নের বগা বন্দর পোস্ট অফিসে শতাধিক গ্রাহক মাসিক মুনাফায় ও ফিক্সড ডিপোজিট করে টাকা জমা রাখতেন। সাব-পোস্ট মাস্টার আবদুল ওহাব গ্রাহকদের হিসেব বইয়ে টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। টাকা জমা রাখার সময় কোনো রকম রশিদ দেননি । তবে সাদা কাগজে তার সীল ও স্বাক্ষরিত একটি করে টোকেন গ্রাহকদের দিতেন।
সম্প্রতি গ্রাহকরা তাদের মুনাফার টাকার হিসেব চাইতে গেলে গড়িমসি শুরু করেন সাব পোস্ট মাস্টার ওহাব। পরে গ্রাহকরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তাদের অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা জমা দেয়া হয়নি। পুরো টাকাই সাব-পোস্ট মাস্টার আত্মসাৎ করেছেন।
বগা ইউনিয়নের পুতুল রাণী নামের এক ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘পরিবারের উপার্জনের প্রায় ৫লাখ ৭০হাজারটাকা সাধারন মুনাফা হিসেবে জমা রাখি। পোস্ট মাস্টার সেই টাকা বইতে জমা না রেখে আত্মসাৎ করেন। টাকা জমা রাখার সময় তিনি আমাকে তার স্বাক্ষর ও সীলমোহরযুক্ত একটি টোকেন দিয়েছেন। ৭দিন পর নতুন বই দিবেন বলে জানান। পরে বই নিতে গেলেই আজ কাল পরশু দিবেন সময় নেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তিনি আমার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘টাকার জন্য তার সংসার ভাঙার পথে। এনিয়ে প্রতিদিনই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্ব›দ্ব হয়।’ টাকা ফিরে পেতে আকুতি জানিয়েছেন ওই নারী।
একই ইউনিয়নের চাবুয়া গ্রামের নুর সাহেদার ৬ লাখ টাকা, রাজনগর গ্রামের সেতু রানীর ৫ লাখ ৫০হাজার টাকা, ছায়া রানীর ৩ লাখ ৩০হাজার টাকা, সাবুপুরা গ্রামের রিজিয়া বেগমের দেড় লাখ টাকা ও লাইজু বেগমের ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন ।
কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, শতাধিক গ্রাহকের প্রায় ২কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন সাব-পোস্ট মাস্টার আবদুল ওহাব।
এদিকে গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার (১৬আগস্ট) অভিযুক্ত সাব পোস্ট মাস্টার আবদুল. ওহাবকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বগা বন্দর পোস্ট অফিসের সদ্য যোগদানকৃত সাব-পোস্ট মাস্টার শহিদুল ইসলাম বলেন‘এখন পর্যন্ত ৫৩জন গ্রাহক ১কোটি ৫০ লাখ ৬০হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দিয়েছেন। এর সংখ্যা আরও বেশি হবে।’
বাউফল থানার ওসি এটিএম আরিচুল হক বলেন,‘ লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।