মো: জহিরুল ইসলাম (পাশা):
কুমিল্লার তিতাসে প্রবাসী জামাই শশুরের সমকামিতায় সংসার ভাঙলো মা ও মেয়ের। উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়নের দড়িকান্দিতে এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় বইছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়নের দড়িকান্দি গ্রামের মৃত আলী আহম্মদের ছেলে বাহরাইন প্রবাসী নুরুজ্জামান দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ বিদেশে থাকেন। পূর্ব পরিচয়ের সুবাদে একই গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে রুবেল হোসেনকে গত ৪ বছর আগে বাহরাইনে নিয়ে যান। সেখানে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০২১ সালে প্রবাস থেকে ফিরে এসে নুরুজ্জামানের নাবালিকা মেয়েকে রুবেলের সাথে বিয়ে দেন। মেয়ে নাবালিকা হওয়ায় পারিবারিক সিদ্ধান্তে সাবালিকা হওয়া পর্যন্ত রুবেলকে অপেক্ষা করতে বলা হয়। আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে নুরুজ্জামানের স্ত্রী তার নাবালিকা মেয়েকে দিয়ে আদালতের মাধ্যমে রুবেলকে ডির্ভোস দেয়। বিষয়টি নুরুজ্জামান জানার পর গত ১৩ আগষ্ট তার স্ত্রীকে আদালতের মাধ্যমে ডিভোর্স দেন। নুরুজ্জামানের সংসারে ২ ছেলে ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। বিষয়টি এখন টক অব দ্যা তিতাসে পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে দড়িকান্দি গ্রামে গেলে একাধিক ব্যক্তি জানান, নুরুজ্জামানের মেয়ে নাবালিকা। বর্তমানে তার বয়স ১৩ বছর হবে। তবে জামাই শশুরের চলাফেরা দৃষ্টিকটু। তারা দুইজনে সারাদিন হোন্ডা দিয়ে একসাথে চলাফেরা করেন। রাতেও একই সাথে ঘুমান।
নুরুজ্জামানের স্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, আমাদের ২১ বছর হয় বিয়ে হয়েছে। আমাদের সংসারে ২ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। বিগত ৪ বছর আগে বিনা পয়সায় রুবেলকে আমার স্বামী বিদেশ নেয়। বিদেশে এক বালিশে এক কম্বলের নিচে ঘুমাতো এবং সমকামিতা করতো দুইজনে। আমার ভাই, ভাগিনা ও বোন জামাইরা তা দেখে ফেলে। তাদের বাঁধা মানতো না আমার স্বামী। দেশে আসার পর আমার মেয়ে তার বাবার মোবাইলে দুইজনের সমকামিতার ভিডিও দেখে ফেলে এবং রুবেলকে ডিভোর্স দেয়।
এ বিষয়ে নুরুজ্জামান জানান, আমার স্ত্রী আমার কথা শোনে না। লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। তাই আমি আমার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছি। এটা আমার ব্যাপার। তবে সমকামিতার অভিযোগ অস্বীকার করেন।
রুবেল হোসেন জানান, জামাই শশুরের সম্পর্কের আগেই নুরুজ্জামানের সাথে আমার বন্ধুত্ব ছিল। দুইজনে এক সাথে চলাফেরা করেছি। এখন আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। তবে আমাদের মধ্যে সমকামিতা সম্পর্ক নাই।
ভিটিকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মো. বাবুল আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। উভয় পক্ষই আমার কাছে এসেছিল। আমি বলেছি লিখিত অভিযোগ করলে আমি ব্যবস্থা নেব।
তিতাস থানার ওসি সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, নুরুজ্জামানকে আটকের জন্য আমরা একাধিকবার অভিযান চালিয়েছি, তাকে পাওয়া যাচেছ না। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।