মো:ফিরোজ,বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চরব্রেট এলাকায় তরমুজ চাষীর বাসায় ডাকাতির ঘটনার ৪দিন পর লুট করে নেওয়া মালামালের আংশিক উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (২৫ ফেব্রæয়ারি) রাতে ওই চাষীদের বাসায় মালামাল দিয়ে যায় ডাকাতির সাথে জড়িত নিজাম ফকির নামের এক ব্যক্তি। এর আগে গত ২১ শে ফেব্রæয়ারি (মঙ্গলবার) রাত আড়াইটার দিকে ১০/১২জনের একটি ডাকাত দল চাষীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রায় ৩লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
চাষী মো. নুর হোসেন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার নুরাবাদ গ্রামের মো. নুর হোসেন চন্দ্রদ্বীপের উত্তর চরব্রেট এলাকায় তরমুজ চাষ করেন। তরমুজ খেতের পাশে ছোট ঘরে চাষীরা ও মালামাল রাখা হয়। ২১ ফেব্রæয়ারি রাতে ওই ঘরে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ১০/১২জনের একটি ডাকাত দল চাষীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৪৮ বস্তা সার, ৬বস্তা চাল, পাম্প মেশিন ও কিটনাশকসহ প্রায় ৩লাখ টাকার মালামল লুট করে। ২২ ফেব্রæয়ারি (বুধবার) চরমিয়াজান চেয়ারম্যান বাজারে ঘাটে বেঁধে রাখা ট্রলারে ইউপি সদস্য মো. আবুল বশার মৃধা সারের সাথে ডাকাতি হওয়া সারের আলামত পাওয়া যায়। তবে ইউপি সদস্য বশার ওই সার তার বলে দাবি করেন। গোপনে চাষী নুর হোসেনসহ স্থানীয়রা ডাকাতির ঘটনা উদঘটনের চেষ্টা চালিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে ইউপি সদস্য বশার মৃধা চরমিয়াজান এলাকার বশার বয়াতি ও ইয়াকুব পÐিত নামের দুই ব্যক্তিকে তার বাসায় ডেকে নিয়ে ডাকাতির ঘটনা জানাজানি না করার জন্য অনুরোধ করেন। ডাকাতির মালামাল ফেরত দেওয়া হবে বলে জানিয়ে ইউপি সদস্য বলেন, তোমরা যদি বিষয়টা গোপন না রাখো তাহলে আমার মান সম্মান থাকবে না। মেম্বারের এমন কথাবার্তা মুঠোফোনে রেকর্ড করা হয়। ওই রেকর্ড স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের শোনানো হয়। এনিয়ে বৃহষ্পতিবার রাতে চরমিয়াজান এলাকায় কয়েকশ মানুষের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠক বসে। সালিশ বৈঠকে ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক ট্রলার চালক মো. আল-আমিন সত্য বলার জন্য চাপপ্রয়োগ করেন। এসময় আল-আমিন ডাকাতির ঘটনা স্বীকার করে বলেন, মেম্বার বশার মৃধা ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত। মেম্বারের নির্দেশেই সে ডাকাতির মালামাল পরিবহন করতে যায়।
ঁজানা যায়, ডাকাতির মালামাল মেম্বার বশার মৃধার মাধ্যমে বিক্রি করা হবে ডাকাতের সাথে এমন চুক্তি করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী ডাকাতির ৪৮ বস্তা সার সহ অন্য মালামাল মেম্বারের হেফাজতে রাখ হয়। এ ডাকাতির ঘটনার সাথে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চরমমিয়াজান গ্রামের নিজাম ফকির, বাবুল সরদার, হাবিব হাওলাদার, দেলোয়ার গাজী, লিটন সরদার, রিয়াজ ও সাবিক হাওলাদার জড়িত বলে জানা যায়। এরা সবাই পলাতক রয়েছে। সালিশ প্রধান ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক ডাকাতির মালামাল ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন। আগামী ৭দিন পর ডাকাতির ঘটনার বিচার হবে বলে জানান।
তরমুজ চাষী নুর হোসেন বলেন বলেন, শনিবার রাতে নিজাম ফকির দুই পানির পাম্প মেশিন, ১শ কেজি ডিজেল, ১টি সোলার ব্যাটারিসহ ডাকাতির আংশিক মামামাল দিয়ে গেছে। বাকি মালামল দুই দিনের মধ্যে পৌঁছে দিবে বলে জানায়।
চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের (চরমিয়াজান) ইউপি সদস্য মো. আবুল বশার মৃধা বলেন, আমি ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত না। ঘাটে ট্রলারে আমার সার থাকে। ঘটনার দিনও ঘাটে বাঁধা ট্রলারে সার ছিল। কারা যেনো ডাকাতির সার আমার ট্রলারে রাখছে। যখন আমার ট্রলারে সার পাওয়া গেয়ে তাই আমি বিষয়টি মিমাংসা করে দেওয়ার কথা বলি।
এবিষয়ে বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আল আমিন বলেন,‘ বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।