দিন প্রতিদিন ডেস্ক :
চট্টগ্রামে বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে মানুষ
ভারি বৃষ্টিতে নগরের বিভিন্ন সড়ক-এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন। গতকাল চকবাজার এলাকা।
নগরের বহদ্দারহাট বাদুরতলা থেকে চকবাজার তেলিপট্টি মোড় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কে হাঁটু থেকে কোমর পানি। মুরাদপুর শুলকবহর থেকে বহদ্দারহাট এক কিলোমিটার এলাকার সড়কে হাঁটু পানি। কাতালগঞ্জ থেকে পাঁচলাইশ সড়কের কাতালগঞ্জ এলাকায়ও পানি উঠেছে। এ ছাড়া গতকাল রবিবার নগরের বাকলিয়া, হালিশহর নয়াবাজার, অক্সিজেন থেকে ২নং গেট, বায়েজিদ বোস্তামি সড়কের বিভিন্নস্থানেও সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।
আগের রাত থেকে গতকাল দিনভর কখনো ভারি আবার কখনো মাঝারি বৃষ্টিতে নগরের অনেক সড়ক-উপসড়ক এবং অলিগলিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে সকাল থেকে দিনভর মানুষের দুর্ভোগ ও ভোগান্তি চরমে উঠেছে। সরজমিনে দেখা যায়, জলাবদ্ধতার কারণে অনেক সড়কে যানবাহন চলাচল কম ছিল। যেসব সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে সেখানে রিকশা ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন খুব একটা চলেনি।
একে পুঁজি করে রিকশার ভাড়া কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। অনেককে বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া গুনতে হয়েছে।
এ দিকে সরকারি সাপ্তাহিক ছুটির পর গতকাল চলতি সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস। এ ছাড়া গতকাল থেকে চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা।
কর্মস্থলমুখী মানুষের পাশাপাশি পরীক্ষার্থীরাও সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন।
জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী গতকাল রাত সোয়া আটটার দিকে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চলতি মাসের প্রথম দিকে ভারি বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে রাস্তাঘাট ভেঙেচুরে ৬০/৭০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো মেরামত করার কাজ চলছে। এরমধ্যে আজকে (গতকাল) আবার বৃষ্টি ও কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতায় মানুষ দুর্ভোগে পড়ে।’ তিনি বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে এর সুফল পাবে জনগণ।
’
অক্সিজেন মোড়ে ফরহাদ উদ্দিন নামে এক যুবক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘হাটহাজারী থেকে অক্সিজেন আসতে বড়দিঘির পাড় ও নন্দীরহাট এলাকায় প্রধান সড়কে হাঁটু থেকে কোমরপানি থাকায় গাড়ি চলাচল না করায় পানি ভেঙে হেঁটে আসতে হয়েছে। ২০ মিনিটের পথ আসতে তিনঘণ্টা সময় লেগেছে।’
বহদ্দারহাট এলাকায় জসিম নামে চাকরিজীবী বলেন, সকাল ৮টায় আগ্রাবাদে অফিসে পৌঁছার কথা। কিন্তু কাপাসগোলা এলাকায় বাসার সামনে এবং সড়কে পানি বেশি থাকায় বের হতে পারিনি। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পানি একটু কমলে বের হয়ে এখানে এসেছি অনেক কষ্টে। অফিস যেতে আরও কতক্ষণ লাগতে পারে তা জানি না।
চকবাজার চকসুপার মার্কেটসহ আশপাশের সড়কও ডুবেছে। ওই মার্কেটের সামনে রমিজ নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘বৃষ্টি হলেই এই এলাকা ডুবে যায়। এর কোনো সমাধান কেউ করছে না। আমরা অনেক কষ্টে যাতায়াত করি।’
এদিকে গতকাল নগরের পার্শ্ববর্তী হাটহাজারীর বড়দিঘির পাড় এবং নন্দীরহাট এলাকায় সড়ক ডুবে যাওয়ায় হাজারো মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হন।