বাউফলে তেঁতুলিয়া নদীতে চলছে মা ইলিশ শিকারের মহাৎসব

received_1409893102957697.jpeg

মোঃ ফিরোজ,বাউফল উপজেলা প্রতিনিধি:
বাউফলের তেঁতুলিয়া নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে মা ইলিশ শিকারের মহাৎসব। তেঁতুলিয়া নদীর ৪১ কিলোমিটারে মধ্যে অভয়ারণ্য ঘোষনা করা হলেও এর ৭-৮টি পয়েন্টে চলছে এ মা ইলিশ শিকার। শিকারকৃত মা ইলিশ অভিনব কায়দায় বিক্রি করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাউফল উপজেলার নদী বেস্টিত ধুলিয়া, চন্দ্রদ্বিপ, কেশবপুর, নাজিরপুর ও কালাইয়া এই ৫ ইউনিয়নে মোট ৬ হাজার জেলে রয়েছেন। তারা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে প্রত্যেক জেলেকে ২৫ কেজি করে সরকারী চাল দেয়া হলেও তারা নদীতে মাছ শিকার করছেন।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েক জেলে জানান, তারা মহাজনদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে জাল ও নৌকা ক্রয় করেছেন। প্রত্যেক সপ্তাহে তাদেরকে কিস্তির টাকা দিতে হয়। তাই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তারা নদীতে মাছ শিকারে যান।
তেঁতুলিয়া নদীর ধুলিয়া, মঠবাড়িয়া, নিমদি, বগিসহ ৭-৮টি পয়েন্টে দিবা-রাত্র মা ইলিশ শিকার করেন অসাধু জেলেরা। তাদের প্রতিহত করতে নদীতে টহলের ব্যবস্থা করা হলেও তাদের কার্যক্রম সন্তোষজনক নয়। দিনে দু একবার অভিযান পরিচালনা করেন।
উপজেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, অসাধু জেলেরা মাছ শিকারে সাধারণ ট্রলার ও নৌকার পাশাপাশি পাখি ট্রলার ব্যবহার করেন। ওই পাখি ট্রলারের স্পিট এত বেশী যে অন্য যেকোন ট্রলার বা স্পিড বোর্ড দিয়ে ধাওয়া করেও তাদেরকে ধরা যায়না।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, মা ইলশ শিকারের পর তা অভিনব কায়দায় বিক্রি করা হয়। শিকারকৃত ইলিশ বস্তায় ভরে গ্রামে গঞ্জে বাড়িতে বাড়িতে ফেড়ি করে বিক্রি করা হয়। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিক্রি করা হয় মা ইলিশ । কয়েকটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই মা ইলিশ বিক্রি করা হয়। মোবাইল ফোনে কল দিয়ে চাহিদা জানানোর পর তারা স্কুল ব্যাগ ও বস্তায় ভড়ে তা মটর সাইকেলযোগে ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেন। আবার নির্জন এলাকায় গর্ত করে পলিথিন ও লবন দিয়ে শিকারকৃত ইলিশ মজুদ করে রাখা হয়। অবরোধের পর সেই মাছ অনত্র পাঠানো হবে। অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, মৎস্য বিভাগের কতিপয় ব্যক্তির সাথে যোগসাজ করে মাছ ধরা হয় । এ ছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, চৌকিদার ও দফাদাররা জেলেদের সাথে রফাদফা করে জেলেদের মাছ শিকারের সুযোগ করে দেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহাবুব আলম বলেন,‘ টুয়েন্টি পাসেন্ট জেলেরা মাছ শিকার করতে পারে। আমরা তাদের নিবৃত করতে প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করছি। এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ হাজার মিটার জাল আটকের পর পুড়িয়ে দিয়েছি। ৫ জনকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালত জেল দিয়েছেন। নদীতে মা ইলিশ শিকারের মহাৎসব কথাটি সঠিক নয়।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বশির গাজী বলেন,‘ আমরা অভিযান আরাও জোড়ালো করতে শনিবার জেলা থেকে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এনেছি। আশা করছি অভিযান আগের চেয়ে কঠোর হবে।’
উল্লেখ সরকার গত ১২ অক্টোবর থেকে মা ইলিশ শিকারের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং এ নিষেধাজ্ঞা আগামী ২ নবেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top