স্টাফ রিপোর্টার :
৩৭তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে পিএসসির সুপারিশপ্রাপ্ত হলেও ছোট ভাই ছাত্রদল করায় পদায়ন হয়নি লক্ষ্মীপুরের ইমরানের। এরই মধ্যে হারিয়েছেন বাবাকে। চূড়ান্ত ফলাফলে শিক্ষা ক্যাডারে ৪র্থ হয়েও পদায়নের খবর শুনাতে পারেননি মাকে।
৬ বছর পর গত ১৪ আগস্ট গেজেট প্রকাশ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই গেজেটের খবরের ৪ দিন আগে তার মা মৃত্যুবরণ করেন।
ইমরানের অভিযোগ, ২০১৮ তৎকালীন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ইউএনও শাহাজাহান আলী জামায়াত-বিএনপির তকমা লাগিয়ে প্রতিবেদন দেওয়াতে পিএসসির সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েও পদায়ন হয়নি।
প্রতিবেদনে ইউএনও এ এইচ এম ইমরান হোসাইনের ছোট ভাই মেহেরাজ চৌধুরী লক্ষ্মীপুর আলিয়া মাদরাসা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন উল্লেখ করে। প্রতিবেদন দিলে আটকে যায় তার পদায়ন। এই রিপোর্ট পাওয়ার পর ইমরানের আর গেজেট হয়নি।
পদায়ন না হওয়ার শোকে ইমরানের বাবা হার্ট অ্যাটাক করে মৃত্যুবরণ করেন। এ এইচ এম ইমরান লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বাঞ্চানগরের হাজী আবদুর রহমানের বড় ছেলে।
এদিকে ৩৭তম বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করেছে সরকারি কর্ম কমিশন
(পিএসসি)। বিভিন্ন ক্যাডারে এক হাজার ৩১৪ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করেছে পিএসসি। এদের মধ্যে
লক্ষ্মীপুরের এ এইচ এম ইমরান হোসাইন শিক্ষা ক্যাডারে চতুর্থ স্থানে সুপারিশ প্রাপ্ত হন। অবশেষে গত ১৪ আগস্ট গেজেট প্রকাশ করে পদায়ন করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
ইমরান লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার হোসেনপুর উচ্চ বিদ্যালয় হতে ২০০৪ সালে বিজ্ঞান বিভাগ হতে মাধ্যমিক,
২০০৬ সালে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়। উক্ত বিভাগ হতে ২০১১ সালে (ফলাফল ২০১৩) সাধারণ গ্রেডে বিভাগীয় বৃত্তিসহ বি এস সি
সম্মান শেষ করেন এবং ২০১২ সালে (ফলাফল-২০১৫) একই বিভাগ হতে থিসিসসহ মাস্টার্স শেষ করেন।
পড়াশুনা শেষ করে একটি বেসরকারি কলেজে জীব বিজ্ঞানের প্রভাষক হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেন।
ইমরানের মামা লক্ষ্মীপুর স্থানীয় দৈনিক কালের প্রবাহ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
কাজী মাকছুদুল হকের বলেন, আমার ভাগিনা ৩৭তম বিসিএসে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েও শুধু মাত্র জামাত-বিএনপির তকমায় পদায়ন হয়নি। আমি তৎকালীন কুলাঙ্গার ইউএনও শাহাজাহান আলীর বিচার চাই।
ইমরানের ছোট ভাই মেরাজ চৌধুরী বলেন, আমি লক্ষ্মীপুর আলিয়া মাদরাসা ছাত্রদলের
সভাপতি থাকার কারণে আমার ভাই সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েও চাকরি পাইনি। এই দেশে দল করা অপরাধ। এজন্য মেধাবীরা চাকরি পাবে না। যারা দলীয়করণে আমলা তাদের বিচার করার জন্য সরকারের কাছে দাবী জানাই।
এ এইচ এম ইমরান বলেন, শিক্ষা ক্যাডারে ৪র্থ হয়ে সুপারিশ প্রাপ্ত হই কিন্তু
পদায়ন হয়নি ছোট ভাই ছাত্রদল করায়, এই শোকে বাবা মা দুজনকে হারালাম। কিন্তু বাবা মা দেখে যেতে পারলো না আমার পদায়ন। বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানাই, সব ক্ষেত্রে যেন
বৈষম্য না থাকে। দল বা গোষ্ঠী তকমায় যেন কোনো মেধাবীরা চাকরি থেকে বঞ্চিত না হয়।