‘‘ অশ্লীল নৃত্য ও লটারি আজাদ মেলা’য় চলছে ”

6749fa14110f3-1.jpeg


ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁওয়ে সামাজিক যাত্রাপালার নামে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে রাতভর পরিচালিত হচ্ছে অশ্লীল নৃত্য । শুধু তাই নয়, চটকদার পুরস্কারে বিক্রি করা হচ্ছে লটারি। এতে নষ্ট হচ্ছে যুবসমাজ।

আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্থানীয়রা। তবে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন বলছেন অনুমতি পত্রের বাইরে গিয়ে কার্যক্রম চালানো হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সম্প্রতি গতকাল ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে মেলা ঘুরে দেখা গেছে, ২৯ নভেম্বর শুক্রবার রাতে সমান তালে চলছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা রুহিয়া থানার সামনে অবস্থিত ‘আজাদ মেলা’ প্রাঙ্গণে সন্ধ্যার আগে থেকে একটি প্যানেলে বিক্রিকৃত লটারির বাক্স তোলা হচ্ছে এক ,, এক করে। পরে সারিবন্ধ করে রাখা প্রতিটি বাক্সের ভেতরে ফেলে দেয়া ক্রয়কৃত ২০ টাকা মূল্যের টিকিটগুলো একটি বিছানার চাদরে রাখেন লটারির আয়োজকরা।

রাত ১০টা থেকে শুরু করে লটারির এক একটি কুপন উঠিয়ে মাতেন ভাগ্য নির্ধারনের খেলায়। হাজার হাজার টিকিট বিক্রি করে ৩১টি পুরস্কার প্রদান করতে দেখা গেছে। প্রথম পুরস্কার হিসেবে মোটরসাইকেল প্রদান করায় টিকিট বিক্রি করে একদিনেই লাখ লাখ টাকা লুফে নিচ্ছেন লটারির আয়োজকরা।

রাত ১২ টার আগেই লটারির কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর। পাশের আরেকটি প্যান্ডেলে সৌরভী ডিজিটাল অপেরা যাত্রাপালার নামে শুরু হয় অশ্লীল নৃত্য । একের পর এক চটকদারগান আর শরীর দোলানো অশ্লীল নৃত্য দেখতে ছুটে আসে উঠতি বয়সী যুবকরা। টিকিট প্রতি ১৫০ থেকে ৩শ টাকা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন।

যদিও ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসনের অনুমতিপত্রে উল্লেখ রয়েছে,, সামাজিক যাত্রাপালার কথা। তার উল্টো চিত্র দেখা গেছে,, সেখানে। এই প্যান্ডেলের ভেতরের মেয়েরা উগ্র করে তুলছে যুবকদের। এ সময় যুবকরা সামনে গিয়ে শরীরের উপর টাকা ছিটিয়ে যে যার মতো করে বিনোদন নিচ্ছে । রাত যত গভীর হয় ততই বাড়ে নোংরামির পরিমাণ। যা চলে ভোর রাত পর্যন্ত। মেলায় এমন নোংরা পরিস্থিতির বিষয়টিকে কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিত্বকারিরা।

এ বিষয়ে সাংস্কৃতিক ব্যক্তি মাসুদ আহম্মেদ সুবর্ন সহ ঠাকুরগাঁও জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা জানান, জুয়ার নামে মেলায় লটারির অনুমতি দেয়া মোটেও ঠিক হয়নি, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের। এছাড়া সামাজিক যাত্রাপালার নামে যে নোংরামিপনা শুরু হয়েছে, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এতে সমাজ ধংসের পাশাপাশি বাড়বে চুরি-ছিনতাই। অবনতি হবে আইনশৃংখলা। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিক্ষা চলছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে মেলার অনুমতি দেয়াই ঠিক হয়নি। অবিলম্বে তা বন্ধে দাবি করেন।

মেলা কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমান উপদেস্টা হিসেবে দায়িত্বরত আনসারুল হক জানান, মেলায় অশ্লীল নৃত্য চলছে যা আমার অজানা। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান, তিনি।

আর ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন জানান, লটারি ও সামাজিক যাত্রাপালার অনুমতি দেয়া হয়েছে, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে। তবে যাত্রার নামে কোনো ধরনের নোংরামি পরিবেশিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গেল ২৩ নভেম্বর ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, মেলা কমিটি সহ স্থানীয়দের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়ায় এক মাসব্যাপি আজাদ মেলার উদ্বোধন করা হয়।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top