ইবাদত ও আমল ঈমানের অংশ নয়, তবে তা ঈমানের অপরিহার্য দাবি। ইবাদত ও আনুগত্যের মাধ্যমেই ঈমান পূর্ণতা লাভ করে। আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমেই ব্যক্তির ঈমান দৃঢ়তা লাভ করে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং সৎকর্মপরায়ণ হয় সে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে এক মজবুত হাতল, যাবতীয় কাজের পরিণাম আল্লাহর ইচ্ছাধীন।
’ (সুরা লোকমান, আয়াত : ২২)
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘মজবুত হাতল’ দ্বারা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ তথা ঈমান উদ্দেশ্য। (তাফসিরে তাবারি : ১৮/৫৬৯)
আল্লামা সামারকান্দি (রহ.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে অর্থাৎ নিষ্ঠার সঙ্গে দ্বিন পালন করেছে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমল করেছে সে সৎকর্মপরায়ণ তথা একত্ববাদে বিশ্বাসী। ’ (তাফসিরে সামরকান্দি : ৩/২৭)
মূলকথা হলো, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের সঙ্গে আমলও আবশ্যক। ঈমানের মৌখিক দাবি বা আল্লাহর একত্ববাদের জ্ঞান মুমিন হওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। কেননা মুনাফিকরা মৌখিকভাবে ঈমানের দাবি করে; কিন্তু কাফেরদের কাতারভুক্ত। একইভাবে আহলে কিতাব ও পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষ আল্লাহর অস্তিত্বের জ্ঞান রাখে; কিন্তু তারা মুমিন নয়। ঈমান প্রমাণিত হওয়ার জন্য অন্তরের বিশ্বাস, মৌখিক স্বীকারোক্তি ও আনুগত্য প্রদর্শনের প্রয়োজন হয়। এ জন্য আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারীকে তাঁর আনুগত্যের নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত করতে এবং নামাজ কায়েম করতে ও জাকাত দিতে, এটাই সত্য সঠিক দ্বিন। ’ (সুরা বায়্যিনা, আয়াত : ৫)
অন্য আয়াতে আল্লাহ অবিমিশ্র আনুগত্যকে আল্লাহর প্রাপ্য বলে ঘোষণা করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি তোমাদের কাছে এই কিতাব সত্যসহ অবতীর্ণ করেছি। সুতরাং আল্লাহর ইবাদত কোরো তাঁর আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে। জেনে রাখো, অবিমিশ্র আনুগত্য আল্লাহরই প্রাপ্য।
আল-মাউসুয়াতুল আকাদিয়া