মো: জাফর খান, বরগুনা প্রতিনিধি:
উপকূলীয় জেলা বরগুনায় চার দিনের ভারীবর্ষণে বিপাকে পড়েছেন তরমুজ চাষীরা। বৃষ্টির পানিতে তরমুজের ক্ষেত তলিয়ে গেছে । তরমুজ চাষীরা জানান বৃষ্টির কারণে তরমুজের গাছ ও ফলন পচে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
জানা গেছে, এবছর বরগুনায় ১৫ হাজার ৮ শত ৩৮ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এবছর এ জেলায় তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে। অনেক তরমুজ খেতের তরমুজ বড় হয়েছে। দুই এক সপ্তাহের মধ্যেই কাটার উপযোগী হবে। কিন্তু হঠাৎ এমন বৃষ্টি তরমুজ চাষীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে অনেক ক্ষেত। তরমুজ চাষীরা তরমুজ ক্ষেতের পানি নিষ্কাশনের প্রাণপন চেষ্টা চালাচ্ছেন। অন্যদিকে বরগুনার বিভিন্ন জায়গায় শিলাবৃষ্টি হওয়ায় তরমুজ নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন এক তরমুজ চাষী।
বরগুনা সদরের ঢলুয়া ইউনিয়নের নলী গ্রামের তরমুজ চাষী সিদ্দিকুর রহমান জানান, তরমুজের ক্ষেতে বর্তমানে পানি জমে তরমুজ গাছের গোড়ায় কিছুটা পচন ধরছে। তবে যাতে গাছের গোড়া পচে না যায় সেজন্য পচনরোধক ঔষদ ব্যবহার করছি।আর ফলনেও পচন ধরার কিছু আশঙ্কা আছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এখনও ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা যাবে। তবে বৃষ্টি যদি আরও কয়েকদিন স্থায়ী হয় তাহলে অনেক ক্ষতি হবে। তিনি আড়াই কানি জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন।
বরগুনা সদরের এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের উরবুনিয়া গ্রামের কৃষক ছিদাম জানান, পনিতে ক্ষেত তলিয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য সেচ মেশিন লাগিয়েছি।তাছাড়া শিলাবৃষ্টিতে ক্ষেতের বড় তরমুজ ছোট কড়া যা আছে তার অধিকাংশই নষ্ট হয়ে যাবে আশঙ্ক করছি। খাওয়া ঘুম নাই এখন তরমুজ ক্ষেত নিয়াই চিন্তায় আছি।
বরগুনার আর এক উপজেলা আমতলীতেও তরমুজ চাষীদের একই অবস্থা। আমতলীতে এ বছর ৬ হাজার ২৪০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে।
আমতলীর তরমুজ চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়,বৃষ্টির পানিতে তরমুজের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। তারা পানি নিষ্কাশনে কাজ করছেন। বৃষ্টি স্থায়ী হলে তরমজের গাছ ও ফলন পচে যাওয়ার সম্ভবনা আছে বলে জানান তারা।
গাছ ও তরমুজ পচে গেলে বরগুনার তরমুজ চাষিদের কয়েকশত কোটি টাকা লোকশান হবে বলে জানিয়েছেন তরমুজ চাষীরা। পথে বসে যাবেন হাজার হাজার কৃষক।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম জানান,বৃষ্টিতে ক্ষেতের ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তরমুজ চাষীদের পানি নিষ্কাশনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বরগুনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত উপপরিচালক এস এম বদরুল আলম জানান, বৃষ্টির কারণে তরমুজের তেমন কোনো ক্ষয় ক্ষতির বিবেচনা করি নাই । কারণ রবি মৌসুমে তরমুজে অনেক সেচ দরকার হয় ।যদি পানি না জমে কোনো তরমুজের কোনো ক্ষতি হবে না। যদি আরও বৃষ্টি হয় তবে ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কৃষকদের পরামর্শের জন্য মাঠপর্যায়ে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রয়েছেন । তারা সকল ক্ষয় ক্ষতির হিসাব রিপোর্ট করতেছে।