গরমে শিশুর যত্নে যা করতে পারেন

IMG-20230425-WA0974.jpg

অনলাইন ডেক্স:
গরমে শিশুরা বেশ কাহিল হয়ে পড়ে। এ সময় তাদের প্রতি বিশেষ নজর রাখা জরুরি। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ বিভাগের চিকিত্সক ডা. শামীমা ইয়াসমীন। লিখেছেন মোনালিসা মেহরিন

তীব্র দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ। এর মধ্যে ঈদ উদযাপন করে ছুটি শেষে শহরে ফিরছে মানুষ। উষ্ণ আবহাওয়া শিশুদের জন্য বেশ কষ্টদায়ক। গরমের মধ্যে বাস, ট্রেনে শিশুকে নিয়ে ভ্রমণও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। এ সময় শিশুদের প্রতি বিশেষ খেয়াল না রাখলে ঘটে যেতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত নানা বিপদ। অতিরিক্ত ঘাম, রোদ, গরম ও বিভিন্ন অসুখের কারণে শিশুরা কঠিন সময় পার করে। গরমে শিশুরা অনবরত ঘামে। অতিরিক্ত ঘাম থেকে শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা, নিউমোনিয়া বা ঠাণ্ডা লাগতে পারে। এ জন্য গরমে শিশুদের প্রতি বাড়তি মনোযোগ দেওয়া দরকার।

প্রতিদিন গোসল

শিশুকে প্রতিদিন গোসল করাতে হবে। গোসলের পর শিশুর মাথা ভালোভাবে মুছে দিতে হবে। চুল ভেজা থাকলে ঠাণ্ডা লেগে শিশুর জ্বর, সর্দি-কাশি হতে পারে। তাই ফ্যানের নিচে দাঁড় করিয়ে ভালোভাবে শিশুর গা-মাথা মুছিয়ে দিতে হবে। গরম থেকে বাঁচাতে দিনে কয়েকবার মাথাসহ পুরো শরীর নরম সুতি কাপড় অথবা ভেজা গামছা দিয়ে ভালোভাবে মুছে দিতে হবে। এতে দাবদাহ থেকে স্বস্তি পাবে শিশু।

পর্যাপ্ত পানি পান

গরমে ঘামের কারণে শিশুদের শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি হতে পারে। এ জন্য পানির ঘাটতি পূরণে কিছুক্ষণ পর পর বিশুদ্ধ পানি, ডাবের পানি, রসালো ফলের শরবত খাওয়াতে হবে। তরমুজ, বাঙ্গি, কমলা, মাল্টা গরমে বেশ উপকারী। শিশুকে নিয়ে যদি জার্নি করতে হয়, তবে অবশ্যই পানির বোতল, ডাবের পানি, জুস সঙ্গে রাখতে হবে। একটু পর পর শিশুকে খাওয়াতে হবে। দুগ্ধপোষ্য শিশুকে ঘন ঘন বুকের দুধ পান করাতে হবে। তবে শিশুকে অতিরিক্ত ঠাণ্ডা পানি খাওয়াবেন না। চিকিত্সকের পরামর্শে সালাইন পানি খাওয়াতে পারেন।

সহজপাচ্য খাবার

শিশুকে যত্রতত্র খাওয়ানো যাবে না। রাস্তাঘাটে বিক্রি হওয়া চটকদার রঙের জুস, শরবত বা বোতলজাত পানীয় খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে। বাসায় তৈরি খাবার খাওয়াতে হবে। সহজে পরিপাক হয় এমন শাক-সবজি, মাছ, খিচুড়ি বাচ্চাকে খেতে দিতে হবে। শিশুকে যতটা সম্ভব তরল বা নরম খাবার খাওয়াতে হবে। গরমে তেল, মসলা, ভাজাভুজি, ঝালঝোল ধরনের খাবার খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে। গরমে হজমশক্তি ব্যাহত হয়ে শিশুর পেট খারাপ বা ডায়রিয়া হতে পারে। এ জন্য সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা

শিশুর খাওয়ার থালাবাটি, প্লেট, গ্লাস, চামচ, টিফিন বক্স থেকে শুরু করে ওর পরিধানের কাপড় সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ঘেমে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ঘাম মুছে দিতে হবে। শিশুর শরীরের ভাঁজযুক্ত স্থান যেমন—গলা, ঘাড়, বাহুমূল, হাঁটুর নিচের অংশ ঘন ঘন মুছে দিতে হবে। নয়তো ফাঙ্গাসের আক্রমণ হতে পারে। ঘুমের সময় শিশুর বিছানা, বালিশ ঘেমে ভিজে গেল কি না খেয়াল রাখতে হবে। গরমে হজমশক্তি ব্যাহত হয়ে শিশুর পেট খারাপ বা ডায়রিয়া হতে পারে। এ জন্য সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

আরামদায়ক কাপড় ও পরিবেশ

এই গরমে শিশুকে সুতি কাপড়ের আরামদায়ক পোশাক পরাতে হবে। এমন কাপড়ে ঘাম কম হয়। আঁটসাঁট ও মোটা কাপড়ের পোশাক শিশুদের জন্য কষ্টকর। খেয়াল রাখতে হবে, শিশুর পোশাকের মধ্য দিয়ে যেন বাতাস চলাচল করতে পারে। শিশুর থাকার স্থান আরামদায়ক হতে হবে। ফ্যান বা এসি থাকলে চালু রাখতে হবে। ঘরের জানালা খুলে রাখতে হবে। শিশুর ঘরের তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রির মধ্যে রাখতে হবে। অতিরিক্ত গরমের মধ্যে শিশুকে নিয়ে বাইরে যাবেন না। প্রয়োজনে বের হলে ছাতা নিতে হবে। এ সময় শিশুর মাথা টুপি বা পাতলা স্কার্ফ দিয়ে ঢেকেও রাখতে পারেন। গরমে ঘেমে শিশুর হালকা ত্বকে র্যাশ বা ঘামাচি হতে পারে। বারবার চুলকানোর ফলে তা থেকে ত্বকে অন্যান্য সমস্যা হতে পারে। অনেকক্ষণ ডায়াপার পরা থাকলেও এ ধরনের র্যাশ হতে পারে। এসব বিষয়ে নজর রাখতে হবে। গরমের সময় শিশুর চুল বড় রাখবেন না। চুল বড় হলে ঘাম বেশি হয়। তাই এখন চুল ছোট করে কেটে দিন। এতে বেশি আরাম পাবে।

সূত্র:অনলাইন থেকে নেওয়া

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top