মো:ফিরোজ,বাউফল(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর বাউফলে যৌতুকলোভী স্বামীর নির্যাতনে মোসা. সাবিনা বেগম(২২) নামে এক ৫ মাসের অন্তঃস্বত্তা স্ত্রীর মৃত পুত্র সন্তান প্রসব হয়েছে। শুক্রবার রাত ৮ টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অদুরে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গছে, বগা ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের মোজাফফর মুন্সির ছেলে মো. সুজনের সঙ্গে ৫ বছর আগে বাউফল ইউনিয়নের বাশবাড়িয়া গ্রামের আঃ ছালাম মুন্সির মেয়ে সাবিনার বিয়ে হয়। সুজন ঢাকায় একটি টেইলার্সের দোকানে কাজ করেন। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে জামাইকে ২ লক্ষ টাকা দেন সাবিনার বাবা আঃ ছালাম। এরপর ঢাকাতেই স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন সুজন। কয়েক মাস আগে সুজন যৌতুক হিসেবে ফের ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন সাবিনার কাছে। সাবিনার বাবা পেশায় একজন শ্রমিক। অভাব অনাটনের সংসার হওয়ায় জামাইয়ের দাবি করা যৌতিক দেওয়া সম্ভব হয়নি তার। এ কারণে সাবিনার ওপর দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিল সুজন। রোজার ঈদে সুজন ঢাকার বাসা ছেড়ে স্ত্রীকে বাড়ীতে নিয়ে আসেন। শুক্রবার দুপুর ১২ টার দিকে যৌতুকের ওই টাকা চাইলে তা দিতে পরাগতা প্রকাশ করেন সাবিনা। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে সাবিনাকে মারধর করে সুজন। সাবিনা আত্মরক্ষার জন্য দৌড়ে পালানোর সময় পিছন দিক থেকে সাবিনার কোমড়ে লাথি মারে সুজন। এতে অসুস্থ হয়ে পড়ে সাবিনা। স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে। পরে বেশী অসুস্থ্য হয়ে পড়লে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্বজনরা। নেওয়ার পথে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সড়কে পৌছালে রাত ৮ টার দিকে অটোগাড়ীতেই সাবিনা মৃত পুত্র সন্তান প্রসব করেন। পরে আহত অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
কর্তব্যরত চিকিৎসাক মো. সাইদুর রহমান বলেন,তাঁকে (সাবিনা) ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর বাহিরে এই মুহুর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে সুজন মোল্লা অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, বৃহস্পতিবার আমি ঢাকা এসেছি। শুক্রবার নির্যাতন করার প্রশ্নই উঠেনা ? সাবিনার অন্য ছেলের সঙ্গে প্রেম আছে, তাই আমার সঙ্গে থাকতে চায় না। এ কারণে আমার সন্তান মেরে ফেলেছে।’
বাউফল থানার বগা পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ(তদন্ত) মো. নিরু মিয়া বলেন, এ ঘটনায় বাউফল থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে আজ (শনিবার) সকালে মৃত সন্তানের ময়না তদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে।