সংস্কার দাবিতে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের কমিটি বিলুপ্ত করতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

IMG-20240815-WA0000.jpg

আলমগীর কবির উজ্জ্বল খান, ময়মনসিংহ :

ময়মনসিংহে গঠিত অধিকার বঞ্চিত সাংবাদিক আন্দোলনের ৪০ সমন্বয়ক ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব সংস্কারের ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে ১১ সমন্বয়ক ও ২৯ সহ-সমন্বয়ক রয়েছেন। দীর্ঘ ৪ যুগ কুক্ষিগত ও এক তরফা নিয়মে দখলে রাখা প্রেসক্লাবের দায়িত্ব পেশাদার ও প্রকৃত সাংবাদিকদের কাছে হস্তান্তর করার দাবি জানানো হয়। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পেশাদার ও প্রকৃত সাংবাদিকদের অধিকার নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। সংস্কারের মাধ্যমে দেশের অন্য প্রেসক্লাবের মতো ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবকে পরিচ্ছন্ন প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার দাবি জানানো হয়। এ সময় ভিন্ন পেশার লোকজনের সদস্য পদ বাতিল করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় যেকোনো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির জন্য প্রশ্নবিদ্ধ ব্যক্তিরা দায়ী থাকবেন বলে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করে জানিয়ে দেওয়া হয়।

নগরীর দুর্গাবাড়ি রোডের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জরুরি সভা শেষে উল্লেখিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বক্তারা অভিন্ন বক্তব্যে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। তারা বলেন, ৪ যুগের বেশি সময় একের পর এক স্বার্থান্বেষী মহল আইনজীবী, শিক্ষক, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী ও সরকারি চাকরিজীবীদের সদস্য বানিয়ে প্রেসক্লাব কুক্ষিগত করে রেখেছেন। দোকান বরাদ্দ দিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাত করেছেন। সাংবাদিকদের নাম ভাঙ্গিয়ে মোটা অংক চাঁদাবাজি করে অনেকেই কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন। ত্রুটিপূর্ণ গঠনতন্ত্র দিয়ে জেলা প্রশাসককে পদাধিকার বলে প্রেসক্লাবের সভাপতি বানিয়ে পেশাদার ও প্রকৃত সাংবাদিকদের দমিয়ে রাখা হয়েছে। অধিকার বঞ্চিত সাংবাদিকরা বিষয়টি নিয়ে আজ দুপুরে জেলা প্রশাসক ও প্রেসক্লাব সভাপতি দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলেন। তাকে আন্দোলনের বিস্তারিত জানিয়ে সভাপতির প্রশ্নবিদ্ধ পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীকে সভাপতির প্রশ্নবিদ্ধ পদ থেকে পদত্যাগ করে আইন, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র সমুন্নত রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে। কুক্ষিগত ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের কমিটি ভেঙে দিয়ে অমিত রায়কে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অপসারণ করার দাবি জানানো হয়। ব্যত্যয় ঘটলে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধেও সাংবাদিক সমাজ রুখে দাঁড়াবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বক্তারা জানান, আমরা ছাড়াও বিভিন্ন গণমাধ্যমের কমপক্ষে ১৫ জন পেশাদার সাংবাদিক ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের বাইরে রয়েছেন। তাদের অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়েও দাবি জানানো হয়। বিভিন্ন দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকার ডিক্লারেশন পুনর্বহালের দাবি জানানোর পর জেলা প্রশাসক দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

সভা শেষে ৪০ সদস্যের সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১১ জন সমন্বয়ক ও ২৯ জন সহ-সমন্বয়ক। সমন্বয়করা হলেন- স্বাধীন চৌধুরী (দৈনিক মাটি ও মানুষ), শাহ মোহাম্মদ রনি (দৈনিক খোলা কাগজ), আলমগীর কবির উজ্জ্বল খান (আনন্দ টেলিভিশন), আব্দুল মান্নান পল্টন (দৈনিক ভোরের পাতা), মোঃ শিবলী সাদিক খান (দৈনিক আজকের বসুন্ধরা), মোঃ আজগর হোসেন রবীন (দৈনিক শ্বাশত বাংলা), সজীব রাজভর বিপিন (দৈনিক দেশের ডাক), আব্দুল কাদের চৌধুরী (জনতার আদালত ডটকম), মজিবুর রহমান মিন্টু (দৈনিক জবাবদিহি), মোঃ আজাহারুল আলম (দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন) ও জহর লাল দে (দৈনিক লাল সবুজের দেশ)।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top