চট্টগ্রামে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে অমার একুশে বইমেলা-২০২৩

received_2409881022514824.jpeg

বাবলা দেঃ
চট্টগ্রামে নানা আয়োজনে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে অমর একুশে বইমেলা-২০২৩ শুরু করার ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। আজ ৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম মাঠে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মেয়র এ ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র বলেন, বর্তমানে তরুণ প্রজন্ম মোবাইল ও মাদকের যে সমস্যায় ভুগছে তা থেকে মুক্তি দিতে পারে বই। বই মুক্তি দেয়, যুক্তি শেখায়। বইমেলা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ তুলে ধরতে সহায়তা করবে এই আমার আশা। এ কারণে চট্টগ্রামের মেয়র হিসেবে এ বইমেলার সার্বিক কার্যক্রমে আমি সংযুক্ত থেকে গর্বিত। মেলার দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে প্রচুর অর্থ ব্যয়ে ধুলোবালিমুক্ত পরিবেশে চলাচল নিশ্চিত করতে মেলা প্রাঙ্গণে ত্রিপল এবং ইট বিছানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, নিশ্চিত করা হয়েছে নিরাপদ পরিবেশ।
মেয়র জানান, এবারের মেলার অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে নজরুল দিবস, মাতৃভাষা দিবস-২১ ফেব্রিয়ারি, লোক উৎসব, রবীন্দ্র উৎসব, তারুণ্য উৎসব, নারী উৎসব, বসন্ত উৎসব, মরমী উৎসব, আবৃত্তি উৎসব, নৃগোষ্ঠী উৎসব, লেখক সমাবেশ, যুব উৎসব, শিশু উৎসব, পেশাজীবী সমাবেশ, মুক্তিযুদ্ধ উৎসব, ছড়া উৎসব, কুইজ প্রতিযোগিতা, চাটগাঁ উৎসব, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, বইমেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান। ইতোমধ্যে মেলার সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা ও ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। দেশের খ্যাতিমান কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ প্রতিদিনের বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় অংশ নেবেন।
এবারও মেলা প্রাঙ্গণে থাকছে দৃষ্টিনন্দন বঙ্গবন্ধু কর্ণার। লেখক আড্ডাসহ নারী কর্ণার এবং ওয়াইফাই জোন। এছাড়াও নিরাপত্তার স্বার্থে পুরো মেলা প্রাঙ্গন সিসিটিভি নেটওর্য়াকের আওতাভুক্ত থাকবে। কার্যালয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে । মেলা মঞ্চে প্রতিদিনই নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। মেলায় প্রতিদিনের আলোচনা সভায় বাঙালির সাহিত্য-ইতিহাস-ঐতিহ্যসহ নানান বিচিত্র বিষয়ের সমাহার ঘটানো হয়েছে ।
এছাড়াও মেলা মঞ্চে প্রতিদিন শিশু কিশোরদের চিত্রাংকন, রবীন্দ্র-নজরুল-লোক সঙ্গীত, সাধারণ নৃত্য, লোক নৃত্য, আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা, দেশের গানের আয়োজন করা হবে। মেলাকে আকর্ষণীয় করার লক্ষ্যে চট্টগ্রমের লেখক, সাহিত্যিক, সংস্কৃতি কর্মী ও বইপ্রেমীদের নিয়ে বিভিন্ন উপ-পরিষদ গঠন করা হয়েছে। তাদের সহযোগিতায় প্রতিদিনের অনুষ্ঠানমালা সাজানো হয়েছে। অনুষ্ঠানগুলোতে বাংলাদেশের প্রথিতযশা লেখক, সাহিত্যিক, শিক্ষিবিদ, বুদ্ধিজীবী উপস্থিত থাকবেন। মেলা মঞ্চে প্রতিদিন মুক্তিযুদ্ধের জাগরণী ও দেশাত্ববোধক গান পরিবেশিত হবে।
মেলায় লেখক-পাঠক দর্শনার্থীরা যেন সামাজিক দূরত্ব বাজায় রেখে প্রাণ খুলে ঘুরে বেড়াতে পারে-বই ক্রয় করতে পারে সেজন্য মেলার প্রচুর খোলা জায়গা রাখা হয়েছে। প্রায় ১ লাখ ২ হাজার ৩০০ বর্গফুটের সুবিশাল আয়তন জুড়ে মোট স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৪০টি । এরমধ্যে ডাবল স্টল ৩২টি এবং সিঙ্গেল স্টল ৭৬টি। চট্টগ্রামের পাশাপাশি ঢাকার সৃজনশীল অভিজাত প্রকাশনী সংস্থা গুলো মেলায় অংশ নিচ্ছে এবং তাদেরকে স্টলও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ঢাকা এবং চট্টগ্রামসহ মোট ১০৮টি প্রকাশনা সংস্থা মেলায় অংশ নিচ্ছেন।
এবারের মেলায় থাকছে-নতুন বইয়ের মোড়ক উম্মোচন, মঞ্চ ও সেলফি কর্নার। এছাড়াও ৫২’র ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার আন্দোলনে অংশগ্রহন কারীদের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকবে। মেলা পরিষদের কক্ষ, সুপরিসর মিডিয়া সেন্টার, হেলথ কর্নার, ফায়ার সার্ভিস, অভ্যর্থনা কক্ষ, টিভি বুথ, এটিএম ব্যাংকের বুথ, সার্বক্ষণিক সেবা ব্যবস্থাপনার জন্য সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন বিভাগের সার্ভিস বুথ থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন-অমর একুশে বইমেলা কমিটির আহবায়ক ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, মেলা কমিটি সদস্য সচিব লুৎফুন নাহার, চসিক শিক্ষা কর্মকর্তা উজালা রানী চাকমা, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেব দুলাল ভৌমিক, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান মাকসুদ আহমেদ, শাহ আলম নিপু, আলী প্রয়াস, শুকলাল দাশ,শামসুদ্দিন হারুন, আইয়ুব সৈয়দ, আজাদ বুলবুল, কামরুল হাসান বাদ, আশেক রসুল চৌধুরী টিপু প্রমুখ।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top