নাসিম আনোয়ার:
এখন নিজেই নিজের কাছে অচেনা অদ্ভুত।
পানি ঘোলা করছি, অথচ কি শিকার করবো নিজেই জানিনা!
আমরা দেশ প্রেমিক,অথচ আমাদের দেশে কি আছে,তা আমাদেরই জানা নেই। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া অর্থাৎ আমাদের পুরো বাংলাদেশটিই একটি অপরূপ পর্যটন নগরী।
পর্যায়ক্রমে সমগ্র বাংলাদেশের পর্যটন এলাকা গুলোকে ঢেলে সাজানো হলে এবং বিদেশি ভ্রমন পিপাসুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারলে,বাংলাদেশের একমাত্র আয়ের উৎস হতে পারে পর্যটন শিল্প।
আমরা কি একটু গভীর ভাবে ভেবে দেখতে পরি;?এমন কি আছে আমাদের বাংলাদেশে!? কেনো বিদেশিদের দৃষ্টি আমাদের ওপর!!
কি নেই আমাদের সোনার বাংলায়! আমাদের আছে বঙ্গোপসাগর – সাগর সম্পদ।আমাদের আছে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত।প্রায় একশো কিলোমিটার সৈকত পৃথিবীর আর কোনো দেশে নেই।
আমাদের আছে মানব সম্পদ।
১৯৪৭ সালে ধর্মভিত্তিক স্বৈরতান্ত্রিক রাস্ট্র পাকিস্তান সৃষ্টির পরই পূর্ব বাংলায় শুরু হয় বাঙালির জাতিসত্তা ও মাতৃভাষার অধিকারের ওপর আক্রমণ। সেই থেকেই শুরু। আর থেমে নেই আজো চলছে ষড়যন্ত্র। বাঙালীকে দমিয়ে রাখার পায় তারা। দেশ আর মানবসম্পদ মেরুদন্ডহীন করে দেয়ার সুনিপুণ কৌশল।
আমাদের দুর্ভাগ্য, অপরূপ সোনার বাংলায় বিদেশি পর্যটক নেই বললেই চলে। দীর্ঘ সাগর সৈকত কক্সবাজার, সাগরকণ্যা কুয়াকাটা, সুন্দরবন সহ পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, বান্দর বান,খাগড়াছড়ি এলাকায় বিদেশি পর্যটকদের দেখা মিলছে না।বিদেশি পর্যটকদের বাংলাদেশ ভ্রমনের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্য দায়ি আমরাই।আমরা বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের সৌন্দর্যকে তুলে ধরতে পারছি না।
ঋতুবৈচিত্র আর ভৌগোলিক দিক থেকে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের দেশের চেয়ে ব্যতিক্রম।
ছ’ ঋতুর এই বাংলাদেশে ছ’ রকম সৌন্দর্য বিরাজ করে।
বাঙালি সংস্কৃতি – ঐতিহ্য, ঈদ- পূজা পার্বণ।এ এছাড়াও রয়েছে আদিবাসী সংস্কৃতি। আমরা গর্বিত, আমাদের সম্প্রতির সেতুবন্ধন রয়েছে।
ঐতিহ্যের আর আধুনিকতার সমন্বয়ে রাজধানী ঢাকা জুড়ে অসংখ্য বেড়ানোর স্হান রয়েছে স্বল্প পরিসরে সেই স্হানের বিবরণ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এগারোটি জেলা নিয়ে গঠিত বাংলাদেশের বানিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামে বেড়ানোর মতো রয়েছে অসংখ্য স্হান,পাহাড়, সাগর, লেক, নদী কি নেই বন্দর নগরী চট্টগ্রামে।
শিল্প নগরী খুলনা জগতখ্যাত ম্যানগ্রোভ ছ’হাজার কিলোমিটার বনাঞ্চল সন্দর বনের রাজা রয়েল বেঙ্গল আর বিশ্ব ঐতিহ্য মিলিয়ে খুলনা পর্যটকদের কাছে দারুণ প্রিয়। অসংখ্য নদী বেষ্ঠিত এলাকা। এ ছাড়াও রয়েছে মংলা সমুদ্র বন্দর।
বরিশাল। নদী বেষ্টিত ও শস্যের ভান্ডার হিসেবে খ্যাত বরিশাল জেলা। নৌ যোগাযোগের সারল্য ও টাটকা শস্যের কল্যাণে প্রচীনকাল থেকেই বরিশাল বানিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে জনপ্রিয়। নদী মাতৃক বাংলাদেশ বরিশালের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণেই নন্দিত।
গারো পাহাড় দেখা যাবে ময়মনসিংহে।কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালা, মুক্তাগাছা জমিদার বাড়ি সহ রয়েছে অসংখ্য ঐতিহাসিক নিদর্শন।
শান্ত শহর রাজশাহী ও রংপুরে আপনার ভ্রমন আনন্দময় হবে। ঐতিহাসিক – প্রত্নতাত্বিক দর্শনীয় স্থান রয়েছে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ জুড়ে।
সবুজে সবুজে ঘেরা দু’ টি কুড়ি একটি পাতর এলাকা বলে খ্যাত সিলেট বিভাগ। নৈসর্গিক সৌন্দর্য, প্রাকৃতিক সম্পদ আর সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির সম্মিলিত জনপদ।সুরমা নদীর কোল ঘেঁষে অসংখ্য টিলা আর পাহাড় দেখে যে কোনো মানুষের মন আনন্দে ভরে উঠবে।ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আপনার ভ্রমন অন্তভূক্ত করতে পারেন হযরত শাহজালাল( রাঃ)হযরত শাহপরান (রাঃ)সহ ৩’শ ৬০ আউলিয়ার পুণ্য ভূমিতে।
কক্সবাজার, পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, বান্দর বান, খাগড়াছড়ি, দক্ষিণ বঙ্গের পটুয়াখালীর সাগর কণ্যা কুয়াকাটা , উত্তর বঙ্গের ঐতিহাসিক নিদর্শন সহ সার বাংলার দর্শনীয় স্থানগুলোর বিবরণ এখানে তুলে ধরা হয়নি।
ছবি ঋণঃ গুগল। (সৈকত ও সাগর লতা ( সী কোস্টাল) গ্রাম বাংলার বরযাত্রী আর পালকি)