দীর্ঘদিন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় সেবা বঞ্চিত ইউনিয়নের বিশ হাজার মানুষ

received_529240342737820.jpeg

মোঃ ফিরোজ, বাউফল উপজেলা প্রতিনিধি:
স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার প্রতিটি ইউনিয়নে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র গড়ে উঠালেও তদারকির অভাবে কাংখিত সুবিধা পাচ্ছেনা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ধূলিয়া ইউনিয়নের মানুষ। পর্যাপ্ত জনবল না থাকার অজুহাতে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ থাকলেও দিন রাত জ্বলছে লাইট ।রাতেও টানানো থাকে জাতীয় পতাকা।
সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌছে দেওয়ার লক্ষে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ১৫ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার মধ্যে ১২টি ইউনিয়নে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে গড়ে তুলেছেন। এর মধ্যে বাউফল সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে ধূলিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যান কেন্দ্র। নদী তীরবর্তী ইউনিয়নটির অধিকাংশ লোকের পেশা মাছ ধরা ও কৃষিকাজ। উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিয়কায় না হওয়ায় ওই স্থানের মানুষদের নির্ভর করতে হয় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যান কেন্দ্রের উপর। হাসপাতালটিতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও বিশেষ করে গর্ভবতী মা ও শিশুদের জন্য মূল্যবান ঔষধ সামগ্রী দিলেও এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মালামাল কোথায় যায় স্থানীয়রা জানেননা। তবে সরকারি ঔষধের অনেক দেখা মেলে সংশ্লিষ্ট অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের বাসায়। স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে ফার্মাসিস্ট, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা, অফিস সহায়ক ও একজন আয়া থাকার কথা। অফিস সহায়ক ছাড়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রেটির কোন পদেই জনবল নাই। একজন অফিস সহায়ক থাকলেও অন্যান্য কর্মকর্তারা অফিসে না আসায় তিনি অফিসে আসেননা। স্থানীয়রা স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি থেকে একসময় সেবা পেলেও প্রায় ২ বছর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অফিসটির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পরে আছে অযত্নে অবহেলায়। বর্ষার সময় পানি ঢুকে নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান জিনিসপত্র। অফিসে কোন কর্মচারী বা কর্মকর্তা না থাকলেও দিন রাত জ্বালিয়ে রাখা হয় বৈদ্যুতিক বাল্ব।
স্থানীয় কলেজ শিক্ষার্থী হুজাইফা ইসলাম জানান, কদাচিৎ দুই একটি জাতীয় দিবসে এসে পতাকা টানালেও মানা হয়না নিয়ম। দিন রাত পেরিয়ে সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও লাঠির মাথায় টানানো জাতীয় পতাকাটি মাসে দুই একবার নামানো হয়। স্থানীয় নারী পুরুষরা জানান, ‘ডাক্তার দ্যাহাইতে আই, হ্যা ডাক্তার পাইনা, কিন্তু হাসপাতালের মধ্যে দিনরাত সারক্ষণ লাইট জ্বলে।’ ধুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির জানান, হাসপাতালটি দুই থেকে আড়াই বছর ধরে তালাবদ্ধ। বিষয়টি বাউফলের কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। তাদের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও অব্যাহত দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বদনাম সরকারের উপর বর্তাবে। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. সানজিদা বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি, তবে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নে যিনি দায়িত্বে আছেন তিনি সপ্তাহে দুদিন ধূলিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কল্যান কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছেন। আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। জনবল দেওয়া হলে বিশেষ করে মা ও শিশু সুরক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারবো। উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের নীতিবাচক বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পরিবার পরিকল্পনার উপ পরিচালক আ.ফ.ম আরাফাত হোসেন জানান, বাউফলে যিনি দায়িত্বে আছেন তিনি সব বলতে পারবেন; আমি কিছুই জানিনা।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top