গলাচিপায় ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ এর বিরুদ্ধে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ সহ ৩৬ টি দূর্নীতির অভিযোগ।

received_1060198172089370.jpeg

রানা,পটুয়াখালীঃঃ
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ৬ নং ডাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ ও ইউনিয়ন পরিষদের অন্যান্য কার্যক্রম সহ ৩৬ টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। এবিষয়ে স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান মন্ত্রনালয়, মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রণালয়,বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পটুয়াখালী, দূর্নীতি দমন কমিশন দুদক প্রধান কার্যালয় , উপজেলা নির্বাহী অফিসার গলাচিপা, প্রেসক্লাব পটুয়াখালী সহ ০৮ দপ্তরে অভিযোগ জমা পরেছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দেয়া হয়েছিল নুর কুতুবুল আলম তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার গলাচিপাকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।

অভিযোগ সুত্রে, প্রকল্প কর্মকর্তা এর যোগসাজশে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (টি,আর, কাবিখা-কাবিটা) ৪০ দিনের কর্মসূচিতে শ্রমিক দ্বারা প্রকল্পের কাজ করানোর বিধান থাকলেও চেয়ারম্যান নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে স্কাভেটর মেশিন বা ভেকু মেশিনে কাজ করিয়েছেন এবং শ্রমিক তালিকায় যে নাম আছে ও মোবাইল নম্বর দেওয়া আছে সেগুলো চেয়ারম্যানের নিজস্ব লোক, আত্নীয় স্বজন মোবাইল সীম গুলো চেয়ারম্যানের জিম্বায় রেখে উক্ত বরাদ্বাের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া (এজিএসপি), ভুমি হস্তান্তর কর ১%,খেয়াঘাট ইজারা বরাদ্দ,উন্নয়ন সহায়তা তহবিল, কোভিট-১৯ উপলক্ষে বরাদ্দ, নলকূপ স্থাপনে মোটা অংকের টাকা উত্তোলন, হাট ইজারার টাকা, এমপির বরাদ্দ, এডিপি বরাদ্দ, ট্রেড লাইসেন্স দূর্নীতি,ভিডব্লিউবি/ভিজিডি কার্ড ও জেলেদের মানবিক সহায়তা প্রদানে অর্থনৈতিক লেনদেন ও চাল বিতরনের সময় অনিয়মসহ টাকা উওোলন, ইউনিয়ন পরিষদ সংষ্কারে অনিয়ম করে বরাদ্দ আত্মসাৎ, বিভিন্ন মন্দিরে সিসি টিভি নির্মান বরাদ্দ আত্মসাৎ, নিজের বাড়ির মন্দিরের ঘাটলা নির্মাণের স্কীম দিয়ে টাকা আত্মসাৎ,ইউনিয়ন পরিষদের নকশা পরিবর্তন করে নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে পরিষদের নিচে গোডাউন নির্মান সহ একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অনিয়মের বিবরনে, ৫ নং ওয়ার্ডে একটি রাস্তায় ভিন্ন ভিন্ন নাম দেখিয়ে তিনটি প্রকল্প বরাদ্দ গ্রহন করে ১ টি বরাদ্দের টাকায় স্কীম বাস্তবায়ন অন্য দুটি বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করা হয়। একইভাবে ২ নং ওয়ার্ডে ১ টি, ৪ নং ওয়ার্ডে ১টি, ৬ নং ওয়ার্ডে ৫ টি, ৭ নং ওয়ার্ডে ২ টি, ৯ নং ওয়ার্ডে ১ টি রাস্তায় ভিন্ন ভিন্ন নামে একাধিক প্রকল্প দেখিয়ে ১ টি প্রকল্পের বরাদ্দ ব্যায় করে বাকি প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

২নং ওয়ার্ডে বক্স কালভার্ট নির্মান সহ আরো অনেক জায়গায় অভিযোগের পরে কাজ করেন তাতে প্রতিয়মান হয় যে সে দূর্নীতি করেছে। বরাদ্দের টাকা দিয়ে কাজ না করে টাকা আত্মসাৎ করার সত্যতা পাওয়া গেছে ১ টির, এরমধ্যে, ১ নং ওয়ার্ড ১ টি, ২ নং ওয়ার্ডে ৪ টি, ৫ নং ওয়ার্ড ১ টি কালভার্ট নির্মানে অনিয়ম। পুল নির্মানে (এলজিএসপি) ও উন্নয়ন সহায়তা তহবিল থেকে বরাদ্দ দেখিয়ে স্কীম বাস্তবায়ন করা হলেও বাস্তবে ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানের পুরনো মালামাল দিয়ে পুল নির্মান করে বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করা হয় অনিয়মের মধ্যে ১ নং ওয়ার্ডে ১টি, ২ নং ওয়ার্ড ১’টি ও ৬ নং ওয়ার্ড ১ টি পুল নির্মান করা হয়। হাট ইজারা বরাদ্দের টাকা দিয়ে উলানিয়া বাজার ডাকুয়ার অংশে গরুরু হাটে মাঠ ভরাটের টাকা আত্মসাৎ করলেও অভিযোগের পরে তা অংশিক করে সম্পন্ন দেখানো হয়। ৬ নং ওয়ার্ডে কমিউনিটি ক্লিনিকের রাস্তা নির্মানে এডিপির টাকায় সড়ক নির্মান করে (এলজিএসপির) বরাদ্দ আত্মসাৎ।

চেয়ারম্যান বিশ্বজিত রায় তাহার সহযোগী হানিফ গাজী ৫ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য প্যানেল চেয়ারম্যান-১, এবং ২ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলামের এর যোগসাজশে এসব দূর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন চেয়ারম্যান একজন থানার দালাল সেই ভয়ে সাধারন মানুষ কোন সত্য কথা বলতে পারছেনা,কেউ কেউ বললে তাকে মিথ্যা মামলায় জরিয়ে দেয় এমন অনেক ভুক্তভুগি আছে। ট্রেড লাইসেন্স এ নিয়ম অনুযায়ী সচিবের সাক্ষর থাকার নিয়ম অথচ ২ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলামের সাক্ষর দিয়ে টাকা আদায় করা হয় যাহা স্থানীয় মন্ত্রণালয়ের ২০২১ সালের আইনের বহির্ভূত কাজ। ট্রেড লাইসেন্স বই ছাপিয়ে সরকারি ফান্ডে রাজস্ব জমা না দিয়ে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। হানিফ গাজী তার স্ত্রী সহ পরিবারের অন্যান সদস্যদের নামে একাধিক টিসিবি ছাড়িয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

এব্যাপারে ৬ নং ডাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্বজিত রায়ের বক্তব্য নিতে পরিষদে অনুপস্থিত পাওয়া যায়। উপজেলা কার্যালয়ে দেখা হলে বক্তব্য চাইলে তিনি বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহিউদ্দিন আল-হেলাল বলেন, ডাকুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে প্রকল্পে অনিয়ম দূর্নীতি করে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ তদন্তে তিন বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কারিগরি তদন্ত রিপোর্ট পেলে সঠিক আইনগত ব্যবস্থা নিবেন উর্ধতন কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। তদন্ত শেষে সঠিক প্রতিবেদন দাখিল করবো দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।

এবিষয়ে উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খোকন চন্দ্র বলেন, আমি আপনাদের মাধ্যমে অনিয়মের অভিযোগ জানতে পেরেছি তদন্ত করে দেখবো। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top