স্টাফ রিপোর্টার:-
রোজ মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষরা বান্দরবানে বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে প্রার্থনার জন্য জড়ো হতে থাকে।
এই সময় শত শত নর-নারীরা বৌদ্ধ বিহারে গিয়ে পুণ্য লাভের আশায় বুদ্ধকে অনুসরণ করে তাদের নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ভিক্ষুদের মধু পূজা পাশাপাশি বিভিন্ন ফলমূল, মধুমিশ্রিত পায়েস ও ছােয়াইং (খাবার) দান এবং ধর্মীয় সমবেত প্রার্থনায় অংশ নিয়ে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করেন।
সন্ধ্যায় পূজনীয় ভিক্ষুসংঘের উদ্দেশ্য সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান ও হাজার প্রদীপ প্রজ্বলন, ধর্মীয় সভা ও বুদ্ধ-কীর্তনসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলাতেও অত্যন্ত জাকজমকপূর্ণ-ভাবে পালিত হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মলম্বীদের মধু পূর্ণিমা।
বৌদ্ধ ধর্মলম্বীরা জানান, গৌতম বুদ্ধ বনে বর্ষা যাপন কালে একটি একাচারী হাতি প্রতিদিন বুদ্ধের সেবা করত।বিভিন্ন জায়গা থেকে বনের ফল সংগ্রহ করে বুদ্ধকে দান করত। এ সময় বনের একটি বনর হস্তীরাজ কর্তৃক বুদ্ধকে সেবা করতে দেখে তারও বুদ্ধকে পূজা করার ইচ্ছা জাগে। ভাদ্র পূর্ণিমাতে সে একটি মৌচাক সংগ্রহ করে বুদ্ধকে দান করেন। মৌচাকে মৌমাছির ছানা ও ডিম থাকায় বুদ্ধ প্রথমে মধু পান করলেন না।বানর তা বুঝতে পেরে মৌচাকটি নিয়ে ছানা ও ডিম পরিষ্কার করে পুনরায় বুদ্ধকে দান করলে এবার বুদ্ধ দানীয় মধু পান করেন। পারিলেয়া বনে হস্তিরাজ কর্তৃক ভগবান বুদ্ধের সেবাপ্রাপ্তি ও বানরের মধুদানের কারণে এ দিনটি বৌদ্ধদের কাছে স্মরণীয় ও আনন্দ-উৎসবমুখর পুণ্যময় একটি দিন। তাই এইদিনটিকে বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীরা মধু পূর্ণিমা হিসেবে উদযাপন করে আসছেন।
প্রসঙ্গত, বৌদ্ধদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলো এই মধু পূর্ণিমা। মধু পূর্ণিমার অপর নাম ভাদ্র পূর্ণিমা। ভাদ্র মাসে এ পূর্ণিমা তিথি অনুষ্ঠিত হয় বলে মধু পূর্ণিমাকে ভাদ্র পূর্ণিমা বলা হয়।