শবেবরাতে বাহারি রকমের হালুয়া ও রুটি তৈরি করেন বাংলাদেশের মুসলিমরা। হালুয়া-রুটি তৈরি ও বিতরণ শবেবরাত উদযাপনের অংশে পরিণত হয়েছে। মধ্য শাবানের রজনীকে বাংলাদেশের মুসলিমরা শবেবরাত নামে উদযাপন করেন। এই রাতে দলবদ্ধ হয়ে মসজিদে ইবাদত করার পাশাপাশি ঘরে ঘরে হালুয়া-রুটির বিশেষ আয়োজন থাকে।
মুসলিম পরিবারগুলো নিজেদের মধ্যে হালুয়া-রুটি বিতরণ করেন। তবে ইসলামী শরিয়তে এর কোনো ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই ইবাদতের অংশ হিসেবে হালুয়া-রুটি তৈরি ও বিতরণ করাও উচিত হবে না।
শবেবরাতের সঙ্গে হালুয়ার সংযোগ স্থাপন করেন মূলত ঢাকার নবাবরা। ঢাকায় নিজেদের আধিপত্য প্রকাশের জন্য নবাবরা ইসলামের বিভিন্ন দিবসকে জমকালো আয়োজনে উদযাপন করতেন। তাঁরা এসব দিবসে মুসলিম নাগরিকদের মধ্যে খাবার ও মিষ্টান্ন বিতরণ করতেন। তাঁরাই প্রথম শবেবরাতে হালুয়া-রুটি বিতরণের প্রচলন করেন। ধীরে ধীরে তা সাধারণ মানুষের মধ্যেও জনপ্রিয়তা পায় এবং তা একটি সাংস্কৃতিক রূপ লাভ করে।
শবেবরাতে সারা দেশেই হালুয়া-রুটি তৈরি ও বিতরণের প্রচলন থাকলেও উৎপত্তিস্থল পুরান ঢাকায় এর প্রভাব বেশি দেখা যায়। পুরান ঢাকার মুসলিম পরিবারগুলো এখনো হরেক রকমের হালুয়া ও চালের গুঁড়ির রুটি তৈরি করে এবং আপনজন ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে পাঠায়। এটাকে তারা পারিবারিক সৌজন্য বিনিময়ের অংশই মনে করে। পুরান ঢাকার বিভিন্ন মসজিদেও মুসল্লিদের মধ্যে হালুয়া-রুটি বিতরণ করতে দেখা যায়।
একটি ধর্মীয় দিবস উপলক্ষে হালুয়া-রুটির আয়োজন হলেও এখন অনেক মুসলিমই জানেন যে এটা ধর্মের অংশ নয়। হালুয়া-রুটি বিতরণ করা ইবাদত নয়; বরং সংস্কৃতির অংশ।