মো. শামছুল আলম :
গ্রামীণ ব্যাংকের ডেপুটি প্রিন্সিপ্যাল অফিসার মো. হেলিম মিয়া, যার পরিচিতি নং-৩৪৪৪৬ এর বিরুদ্ধে গ্রামী ব্যাংকের প্রশাসন বিভাগে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আবেদন করেছেন তার স্ত্রী শাহনাজ বেগম। ঐ আবেদন অনুযায়ী জানা যায়, হেলিম মিয়ার স্থায়ী ঠিকানা গ্রাম : কালিপুর, থানা : ভৈরব, জেলা : কিশোরগঞ্জ। তার পিতার নাম ফজলুল হক, মাতার নাম : রৌশন আরা। মোঃ হেলিম মিয়ার বর্তমান কর্মস্থল গ্রামীণ ব্যাংক সলিমগঞ্জ, নবীনগর শাখা। অভিযোগে বলা হয়, ২০০৪ সালে হেলিম মিয়ার সাথে শাহনাজ বেগমের বিবাহ হয়। তাদের সংসারে দুটো সন্তান রয়েছে। জিসান বয়স-১৭, তামান্না বয়স-১৪। হেলিম মিয়া বায়েক কসবা শাখায় কর্মরত থাকা অবস্থায় তার সহকর্মী হাকিমা জান্নাতের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি অফিসের অন্যান্য সহকর্মীরা জানতে পেরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। ঐ অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বর বিষয়টি তদন্ত করা হয়। হেলিম মিয়া বিভিন্নভাবে উপর মহলে হাত করে ঐ সময় ঐ বিষয়টি ধামাচাপা দেয়। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে মোঃ হেলিম মিয়া ও হাকিমা জান্নাত দোষী ছিল। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হাকিমাকে ধরখায় ও হেলিম মিয়াকে কুমিল্লার মহিচাল শাখায় বদলী করা হয়। এরপর কিছুদিন যাবৎ তারা অবৈধ সম্পর্ক থেকে দুরে ছিল। কিন্তু বর্তমানে আবার তারা অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত রয়েছে।
আবেদনে বলা হয়, অভিযোগকারী হেলিম মিয়ার স্ত্রী শাহনাজ বেগমও ইতিপূর্বে গ্রামীণ ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। তিনি তার স্বামীর কথামতো সংসার টিকিয়ে রাখতে ২০২১ সালের ৪ অক্টোবর শাহবাজপুর সরাইল শাখা হতে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। ঐ আবেদনে শাহনাজ বেগম বলেন, তার স্বামী হেলিম মিয়া হাকিমার সাথে অবৈধ সম্পর্ক করে তার জন্য সে সামাজিকভাবে ছোট হয়। হাকিমা জান্নাতের পরিচয় হলোÑ সে কসবা থানার কাইয়মপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের আবুল খায়ের মাস্টারের মেয়ে। বাবা, মার অজান্তে স্থানীয় এক বখাটে ছেলেকে বিয়ে করে মোঃ হেলিম মিয়ার সাথে পরকিয়া করার জন্য স্বামীকে বিদেশ পাঠিয়ে দেয়। পরবর্তীতে সে স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়।
অভিযোগ রয়েছে, ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের ১০ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত কক্সবাজারের একই রুমে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে তারা অবস্থান করে। বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করে। এই ঘটনার বিচার চেয়ে গ্রামীণ ব্যাংক আবেদন করেছেন স্ত্রী শাহনাজ বেগম। শাহনাজ বেগমের অন্য একটি অভিযোগ অনুযায়ী জানা যায়, হেলিম মিয়া ১৬ বছর বয়সে তার প্রতিবন্দ্বি চাচাতো বোন রেনুকে ধর্ষণ করে। সামাজিক বিচারে তার বাবা রেনুকে এক বিঘা জমি লিখে দেন এবং গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করে। তখন সামাজিক বিচারে হেলিম মিয়াকে ১০০টি বেত্রাঘাত দেয়া হয়। শাহনাজ বেগম জানায়, স্বামীকে খুশি রাখতে সে তার চাকুরি জীবনে ৪,৫০,০০০/-টাকা দিয়ে স্বামীর নিজ বাড়িতে একটি ফ্ল্যাট নির্মাণ করেন। বর্তমানে হেকিমার সাথে পরকীয়ার কারণে শাহনাজের স্বামী তার সাথে সব সময় দুব্যর্বহার, মানুষিক ও শারীরিক নির্যাতন করতে থাকেন। শাহনাজ বেগম এ বিষয়টি প্রতিকারের জন্য গ্রামীণ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ছাড়াও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আইনী সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশন-এর কাছে আইনী সহায়তা চেয়ে আবেদন করেন।