লিটন মাহমুদ,মুন্সীগঞ্জ:-
চিকিৎসা করানোর কথা বলে ছেলে বৃদ্ধা মা-কে খেলার মাঠে ফেলে যাওয়ার কয়েক ঘন্টা পর উদ্ধার করলো স্থানীয়রা।
নড়াচড়া করতে প্রায় অক্ষম এই বৃদ্ধাকে শনিবার রাতে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
৭০ বছর বয়সী রহিমা খাতুন নামের এই বৃদ্ধা গত শনিবার উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের কুসুমপুর জাগরণী সংসদ মাঠের কিনারে একই স্থানে টানা কয়েক ঘন্টা পড়েছিলেন।
৭০ বছরের বৃদ্ধ কে মাঠে পড়ে থাকা অবস্থায় স্থানীয় জনগণ সিরাজদিখান উপজেলার স্থানীয়
মানবিক সাংবাদিক মো. আমির হোসেন ঢালীকে খবর দেন।
স্থানীয়দের সংবাদ পেয়ে মানবিক সাংবাদিক আমির হোসেন ঢালী ঘটনাস্থলের ছুটে যান ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান ৭০ বছরের বৃদ্ধা
মাঠে পড়ে আছেন ।
তিনি স্থানীয় কয়েজন নারীর সহযোগিতায় এবং কুসুমপুর গ্রামের একজন ইজিবাইক চালক ও নাম না জানা এক নারীর সহযোগিতায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আঞ্জুমান আরার নির্দেশে হাসপালের জরুরী বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ডাক্তার মুশফিকুর রহমান রাজীব তার তত্ত্বাবধানে ভর্তি রাখেন এবং চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন।
এসময় হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা সেবিকারা পরম যত্নে তাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেন।
রহিমা খাতুন গুছিয়ে কথা এবং নাম ঠিকানা বলতে পারছিলেন না।
রবিবার দুপুরে রহিমা খাতুনের সাথে
কথা বলে এক ঘন্টার চেষ্টায় দৈনিক সভ্যতার আলোর স্টাফ রিপোর্টার তার পরিচয় জানতে পারেন। পরে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে, সে রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের আবুল হোসেনের স্ত্রী।
তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ মুঠো ফোনে তার ছবি দেখে পরিচয় নিশ্চিত করেন এবং তিনি রহিমা খাতুনের বিষয়টি তার স্বজনদের জানান।
তবকপুর ইউনিয়ন থেকে কয়েকজনে মুঠো ফোনে জানান, রহিমা খাতুনের দুই ছেলে মুন্সীগঞ্জে থাকেন। মেয়ে টাঙ্গাইল জেলার সখিপুরে থাকেন। সখিপুরে থাকা মেয়ের সাথে যোগাযোগ করে জানা যায় তাকে ফেলে যাওয়ার ঘটনা।
তিনি জানান, তার ভাই তার মাকে চিকিৎসা করানোর জন্য তার সাথে রেখে ছিলেন। কিন্তু কি কারনে তার ভাই তার মাকে রাস্তায় ফেলে গেল এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি। মোবাইল ফোনেও তার ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বৃদ্ধা রহিমা খাতুনের মেয়ে জানিয়েছেন, তার মাকে যেন সখিপুরে তার কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। তার ছোট ছোট দুটি সন্তান রয়েছে। এ কারণে তিনি তার মাকে নিতে মুন্সীগঞ্জে আসতে পারছেন না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আঞ্জুমান আরা জানান, হাসপাতাল থেকে তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। পরিবারের কেউ আসলে আপনাদের মাধ্যমে তাকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।