টঙ্গীবাড়ী‌তে ২ বছর ধরে পড়ে আছে উদ্বোধনের আগেই ভেঙে পড়া সেতুটি

din-1-3-2221amin.jpg

লিটন মাহমুদ, মুন্সীগঞ্জ থেকে : টঙ্গীবাড়ী‌তে ২ বছর ধরে পড়ে আছে উদ্বোধনের আগেই ভেঙে পড়া সেতুটি। মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার নগরজোয়ার এলাকায় খালের ওপর নির্মিত সেতুটি উদ্বোধনের আগেই ভেঙে পড়ে। ২ বছর আগে ভেঙে পড়লেও সেটি সংস্কারে উদ্যোগ গ্রহণ করেননি কর্তৃপক্ষ।

টঙ্গীবাড়ী উপজেলার হাসাইল পদ্মাঘাট থেকে শুরু হয়ে চরাঞ্চলের ভেতর দিয়ে চলে গেছে একটি সড়ক। ওই সড়কটি পাশের জেলা শরীয়তপুরের জাজিরা পর্যন্ত সংযুক্ত হয়েছে। সড়কের ৪ কিলোমিটার অংশে বিছানো রয়েছে ইট, বাকি অংশ এখনো কাঁচা। ওই সড়কের মাঝে নগরজোয়ার এলাকায় খালের ওপর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জাইকার অর্থায়নে প্রায় ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় সেতুটি।

সেতুটি দিয়ে মুন্সীগঞ্জ ছাড়াও শরীয়তপুরের নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার মানুষ ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকেন। শরীয়তপুর জেলার বাবুরচর, চিডারচর, নওপাড়া, জয়বাংলা বাজার এলাকায় যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তটি দিয়ে ডাইনগাঁও, আটিগাঁও, নগরজোয়ার, হাসাইল, বানারী, পাচনখোলা, মান্দ্রাসহ প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে থাকে। ফলে সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চরাঞ্চলের ২০টি গ্রামের মানুষের।

স্থানীয়রা জানান, নির্মাণের পরপরই বন্যার পানিতে সেতুটিতে ভাঙন ধরে। ধীরে ধীরে অ্যাপ্রোচ সড়ক বিলীন হয়ে যায়। শুষ্ক মৌসুমে সেতুর পাশ দিয়ে জমির ওপর দিয়ে যাতায়াত করা গেলেও বর্ষাকালে তা সম্ভব হচ্ছে না।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণের সময় সেতুটিতে চরের বালু মিশ্রিত মাটি ব্যবহার করা হয়। আমরা সে সময় বাধা দিলেও ঠিকাদার অনেক প্রভাবশালী হওয়ায় আমাদের কোনো কথায় কর্ণপাত করেনি। ফলে নিম্নমানের বালু নিয়ে সেতু নির্মাণ করে। নির্মাণের পরে উদ্বোধন না করতেই সেতুটি কাত হয়ে গেল। দুই বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে সেতুর পাশ দিয়ে নৌকায় চলাচল করতে হয়। সব সময় নৌকা পাওয়াও যায় না। মাঝে-মধ্যে সাঁতরে পার হতে হয়।

স্থানীয় নগরজোয়ার গ্রামের বৃদ্ধ আব্দুল মজিদ বেপারী (৬৫) বলেন, চার কিলোমিটার হেঁটে বাজারে যাতায়াত করতে হচ্ছে। সেতুটি ঠিক করলে আমরা গাড়ি দিয়ে যাতায়াত করতে পারতাম।

ওই সড়কের বাইক রাইডার পারভেজ সর্দার বলেন, সেতু আছে কিন্তু সেতু দিয়ে আমরা এক দিনও গাড়ি চালাতে পারিনি। এখন সেতুর পাশের জমির ওপর দিয়ে বাইক চালাই। অনেক সময় জমির ওপরের গর্ত দিয়ে বাইক চালাতে গিয়ে আমাদের হাত-পা ভেঙে যায়। আমরা চাই দ্রুত সেতুটি ঠিক করা হোক।

টঙ্গীবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাজেদা রহমান জানান, আমি এখন এখানে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। সেতুটি তৈরির সময় আমি এখানে ছিলাম না। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। ব্যয় আমার জানা নেই। তবে আমরা জানা মতে, ওই সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ৮ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। সেতুটি ভাঙার কারণে আর কোনো টাকা দেওয়া হয়নি। আমি এখানে যোগদানের পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সেতুটি সম্পর্কে জানিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু এখনো তার কোনো উত্তর পাইনি।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top