দোয়ারাবাজারে নদী ড্রেজিংয়ের বালি অবাধে বিক্রি, প্রশাসন নীরব 

IMG-20230505-WA0001.jpg

এস এম আবু বকর,দোয়ারাবাজার সুনামগন্জ প্রতিনিধিঃ
দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামে সুরমা নদী ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে সুরমার ভাঙনরোধে বড় গর্ত, পুকুর ভরাট করা হয়েছিল। কাজ শেষ হওয়ার কিছুদিন পরে নদীর তীরবর্তী পুকর, ভাঙন গর্ত থেকে সংঘবদ্ধ একটি সিন্ডিকেট এসকেভেটর দিয়ে অবাধে বিক্রি করছে বালি। চক্রটি ড্রেজিংয়ের বালি বিক্রি করে ইতোমধ্যে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রকাশ্যে বালি বিক্রি করা হলে গ্রামের লোকজন স্থানীয় প্রশাসনকে বারবার অবহিত করেও কোনো প্রতিকার মিলেনি। অদৃশ্য কারণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্তারা নীরব দর্শকের ভুমিকা পালন করেছেন। 
গত বুধবার গ্রামের কয়েক সচেতন মহল জেলা পুলিশের কাছে মৌখিক অভিযোগ করা হলে দোয়ারাবাজার থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং জড়িতদের থানায় আসতে বলেন। একইভাবে গ্রামের লোকজন বালি বিক্রির শুরুতেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার ভূমি ফয়সাল আহমেদকেও মৌখিক ভাবে অবহিত করেও কোনো কাজ হয়নি। বুধবার গণমাধ্যম কর্মীরা এ বিষয়ে অবহিত করলে এসিল্যান্ড আশ্বস্ত করেছিলেন যে তিনি তা দেখছেন। পরে এর কোনো অগ্রগতি আর দেখা যায়নি। 
স্থানীয়রা বলেন, গত বছর সুরমা নদীর দুই তীরেই ভাঙন প্রতিরোধে প্রায় শত কোটি টাকার প্রকল্পের ড্রেজিং কাজ করা হয়। এরই অংশ হিসেবে উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের নদীর তীরবর্তী ভাঙন কবলিত এলাকার বড়গর্ত, পরিত্যক্ত পুকুর, খেলার মাঠ, মসজি, মাদ্রাসা এবং স্কুল মাঠ ভরাট করা হয়। কাজ শেষ হতে না হতে নুরপুর গ্রামের আবুল কালামের (সুরুজ মিয়া) পুত্র মইনুল ইসলাম, মৃত তোফাজ্জল হোসেনের পুত্র মামুন মিয়া ও তোফাজ্জল মিয়া নেতৃত্বাধীন সিন্ডিকেট গ্রুপ  দেদারসে বালি বিক্রি করে আসছে। গ্রামের লোকজন স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বারবার মৌখিক অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মিলেনি। অধিকন্তু বালি বিক্রি সিন্ডিকেটকে বাধাবিপত্তি দিলে তারা স্থানীয় প্রশাসনের যোগসাজশে বালি বিক্রি করছেন বলে জানান।
নুরপুর গ্রামের শাহ জামাল বলেন, দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশ্যে একটি সিন্ডিকেট ড্রেজিয়ের কোটি টাকার বালি অবাধে বিক্রি করে আসলেও দেখার কেউ নেই। এতে নদী ভাঙন কবলিত নুরপুর গ্রামবাসী ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। গ্রামের মইনুল, মামুন এর নেতৃত্বে প্রকাশ্য এই সিন্ডিকেট দেদারসে বালি বিক্রি করে আসছে। প্রথম দফায় গত ফেব্রুয়ারী মাসে সুরমা ইউনিয়নের গিরিশনগর গ্রামের এখলাছুর রহমান ফরাজীর এসকেভেটর দিয়ে বীরমুক্তিযোদ্ধা আলী আমজদের বন্দোবস্তের ভরাটকৃত পুকুর ও আশপাশ থেকে প্রায় ৬৫ লাখ টাকার বালি বিক্রি করেন।

সাবেক ইউপি সদস্য আলী নুর বলেন, দীর্ঘদিন থেকই সরকারি প্রকল্পের বালি বিক্রি করা হচ্ছে। বালি বিক্রির সঙ্গে জড়িতরা বলছেন ড্রেজিংয়ে তাদের পুকুর ভরাট করা হয়েছিল এখন তারা তাদের পুকুর থেকে বালি বিক্রি করছেন। 
বর্তমান ইউপি সদস্য আব্দুর রউফ বলেন, নুরপুর গ্রামে প্রকাশ্য সরকারি ড্রেজিংয়ের বালি বিক্রি করা হলেও প্রশাসনিক কোনো দৃষ্টিগোচর নেই। মৌখিকভাবে প্রশাসনের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেও দীর্ঘদিনেও কোনো প্রতিকার মিলেনি। অবাধে বালি বিক্রি করায় নদী ভাঙন কবলিত এলাকার ব্যাপক ক্ষতিসহ রাস্তাঘাট এবং পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।
জানতে চাইলে সরকারি বালি বিক্রি সিন্ডিকেট সদস্য মইনুল ইসলাম, মামুন মিয়া জানান, তারা বালি বিক্রির সঙ্গে জড়িত নন। 
দোয়ারাবাজার থানার ওসি দেবদুলাল ধর বলেন, সরকারি ড্রেজিংয়ের বালি তোলার সংবাদ পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে তা বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এব্যাপারে জানতে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ফয়সাল আহমেদ এর মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ মুর্শেদ মিশু বলেন, আমি ছুটিতে আছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এ্যাসিলন্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top