রিপোর্টার, মোঃ আব্দুল হামিদ :-
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি’র নব-গঠিত আহবায়ক কমিটি বাতিলের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন পদবঞ্চিতরা।
রবিবার (১৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার সময় জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক কাজল মাজমাদারের সভাপতিত্বে শহরের প্রধান সড়ক এনএস রোডের দুই পাশে অবস্থান নিয়ে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেছে পদবঞ্চিতরা। পরে পাবলিক লাইব্রেরির মাঠে এক সমাবেশ করেন। এসময় নেতা-কর্মীরা বিএনপি’র নব-গঠিত আহবায়ক কমিটিকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে শ্লোগান দেন। পদবঞ্চিত বিএনপি নেতারা শ্লোগানে বলেন, শহীদ জিয়া অমর হোক খালেদা জিয়া জিন্দাবাদ। লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে। কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির পকেট কমিটি মানি না মানবো না। মামা ভাগ্নের কমিটি মানি না মানবো না। অর্থের বিনিময়ে পাতানো কমিটি মানি না মানবো না।
এ সময় তারা বলেন, কুষ্টিয়া জেলার তৃণমূলের ত্যাগী, নির্যাতিত, পরীক্ষিত ও যোগ্য নেতাদের বাদ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে জেলা বিএনপি’র মনগড়া পকেট কমিটি গঠন করা হয়েছে। নব-গঠিত এই পকেট কমিটি বিএনপি’র ত্যাগী নেতারা প্রত্যাখ্যান করেছেন। একতরফা আহ্বায়ক কমিটি বাতিল করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সাধারণ-সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চু, যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মেজবাউর রহমান পিন্টু ও জেলা কৃষক দলের সাবেক আহ্বায়ক এসএম গোলাম কবির, মিরাজুল ইসলাম রিন্টু, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট শামিমুল হাসান অপু ও নুরুজ্জামান হাবলু মোল্লাসহ ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলের নেতা-কর্মীরা।
এ কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক কাজল মাজমাদার বলেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে আমরা আকুল আবেদন জানাচ্ছি, আমাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ, আপনি এই বিষয়টি দেখবেন। অতি দ্রুত ওই কমিটি বাতিল করে, যে সমস্ত ত্যাগী নেতাকর্মীরা বাদ পড়েছেন তাদের সমন্বয় করে নতুন কমিটি দেয়া হোক। যতদিন এই কমিটি না দেয়া হবে আমরা ততদিন রাজপথে থাকবো। প্রয়োজন হলে এ আন্দোলনকে বেগবান করে কুষ্টিয়া শহর অচল করে দেয়া হবে।
মানববন্ধন পরবর্তী সমাবেশে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম উল হাসান অপু বলেন, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির নব-গঠিত কমিটি বাতিল চেয়ে হাজার হাজার নেতা-কর্মী আমাদের কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। তারা ইতোমধ্যেই শ্লোগান তুলেছেন, কুতুবউদ্দিন আহমেদ-জাকির হোসেন সরকারের নেতৃত্বাধীন মামা-ভাগ্নে পকেট কমিটি মানি না, মানবো না। যতক্ষণ পর্যন্ত এই কমিটি বাতিল করে ত্যাগী বঞ্চিত, পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন সংগ্রাম চলবে। দু-একদিনের মধ্যেই নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে। মানববন্ধনে এনএস রোডের দুই ধার দিয়ে অগণিত নেতা-কর্মী ব্যানার নিয়ে অবস্থান নেন। এ সময় অনেকের হাতেই ছিল নতুন কমিটি বাতিলের দাবি সম্বলিত লিফলেট। কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজল মাজমাদার বলেন, কেন্দ্র দুইজনের কমিটি দিয়েছে, পরে সেই দুইজন যে ৩১ সদস্যের কমিটি দিয়েছে সেটা অবৈধ কমিটি, এই কমিটিতে ত্যাগীদের বঞ্চিত করা হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির নব-গঠিত কমিটিতে বিতর্কিত অনেককেই স্থান পেয়েছেন বলে দাবি করেন বঞ্চিত এই নেতা। তিনি বলেন, কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক যাদের করা হয়েছে, তাদের খোঁজ-খবর নেন। তাদের প্রত্যেকেরই কিছু নেগেটিভ বিষয় রয়েছে। পদ-বঞ্চিত নেতাকর্মীরা থানা মোড় থেকে একটি মিছিল নিয়ে এনএস রোড দিয়ে বড়বাজার যান। বড়বাজার ঘুরে পাবলিক লাইব্রেরির সামনে এসে মিছিলটি শেষ হয়। সবশেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।